আই নিউজ ডেস্ক
বহিস্কারের ঝুঁকি নিয়ে সিটি নির্বাচন করবেন আরিফ!
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের আগেই পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই পাঁচটি সিটির মধ্যে সিলেটের বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মাঠে নেমেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। সূত্রটি বলছে, সিলেটের গত দুই নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি ইতিমধ্যেই তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে নজরানা নিয়ে লন্ডনে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি চেষ্টা করছেন সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে তারেককে রাজি করাতে।
তাই চলতি সপ্তাহে লন্ডন সফরে গিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। নির্বাচনে অংশ নিতে লন্ডনে অবস্থান করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মন গলানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু তারেকের সাথে তার আর্থিক দর কষাকষির কোন সমাধান হয়নি বলেও জানিয়েছে সূত্র।
তবে সূত্রটি বলছে, তারেকের সাথে তার সমাধান না হলেও এবার তিনি সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। আরিফুল হক চৌধরীর একাধিক ঘনিষ্ঠরা তার সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার পেছনে তিনিটি কারণ রয়েছে-
প্রথমত, তার যে নিজস্ব ভোট ব্যাংক এবং তার যে নিজস্ব বাহিনী রয়েছে, নির্বাচনে না দাঁড়ালে সেটি নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য গত রোববার তিনি যুক্তরাজ্য সফরে গেছেন। দেড় সপ্তাহ পর তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আরিফুল জানিয়েছেন, সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি নিজের মতামত জানাবেন।
এছাড়া, উন্নয়নবান্ধব মেয়র হিসেবে সিলেট নগরে আরিফুলের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাই নগরের অনেক ভোটার চান, বিএনপি নির্বাচনে না এলেও আরিফুল যেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তাঁর জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। আরিফুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন, দলের ভেতরে যেমন এমন একটা প্রচারণা আছে, দলের বাইরেও আছে। সব মিলিয়ে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন বলেই মনে হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা সেখানে অপেক্ষাকৃত দুর্বল এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গোলযোগ আছে। সেজন্য মেয়র হিসেবে দাঁড়ালে আরিফুল হকের জেতার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আওয়ামী লীগের আটজন ও জাতীয় পার্টির দুজন নেতা মাঠে নেমেছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে তাঁরা নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন। নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে তাঁদের সমর্থনে ব্যানার, পোস্টার ও বিলবোর্ড টাঙানো হয়েছে। যার ফলে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির ভোট ভাগ হয়ে গেলে, সেখানে সহজেই নির্বাচনে জয়ী হেতে পারবেন আরিফুল। তাছাড়া সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে আটজন প্রার্থী হতে চান, যেখানে অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী একটি অংশ নির্বাচনের সময় আরিফুলের হয়ে কাজ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তৃতীয়ত, সিলেটে যে রাজনীতিক মেরুকরণ সেখানে যদি আরিফুল মেয়র হিসেবে না থাকে তাহলে তার দল এবং তিনি নিজেই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাদের সেখানে আর কোন জায়গা থাকবে না। বিএনপির সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত আরিফুল হক চৌধুরী এক সময় ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। পরে তিনি মহানগর বিএনপির সভাপতি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ টানা দুবার তিনি বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করে মেয়র হন। বর্তমানে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং সিলেট জেলা কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন।
এছাড়া, মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে এখানে একাধিক নেতা তৎপর আছেন। তবে জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার বিবেচনায় আরিফুল হক চৌধুরীর বিকল্প নেতা বিএনপিতে খুব একটা নেই বলেও নগরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে আলোচনা আছে। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো আরিফুলের বিকল্প না থাকলেও দলে তার বিরোধী শক্তির অবস্থান অত্যন্ত পাকাপোক্ত। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসন থেকে বিগত সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের সঙ্গে আরিফুলের ‘ঠান্ডা লড়াই’ আছে বলে রাজনীতির মাঠে প্রচলিত আছে। তাই বিএনপি নির্বাচনে এলেও আরিফুল যেন মনোনয়ন না পান, এ নিয়ে বিপক্ষ বলয়ের নেতারা স্বাভাবিকভাবেই তৎপর থাকবেন। যে কারণে আরিফুল মিয়র হিসেবে না থাকলে তার দল এবং তিকনি নিজে রাজনৈতিক মাঠ থেকে পিছিয়ে পড়বেন।
এই তিন কারণেই মূলত আরিফুল মেয়র নির্বাচন করবেন এবং এখানে যদি তাকে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়, তারপরও তিনি বহিষ্কারের ঝুঁকি নিয়ে হলেও নির্বাচন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে তাকে এই নির্বাচন করতেই হবে।
আইনিউজ/এইউ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’