স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ
দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন। ছবি- আই নিউজ
সিলেটের বিয়ানীবাজারের সৈয়দ নবীব আলী কলেজের অধ্যক্ষ মো. দিলওয়ার হোসেইনের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) উপজেলার আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ সভাকক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ইউপি চেয়ারম্যান আহবাবুর রহমান খান শিশু।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান আহবাবুর রহমান খান শিশু বলেন, ১৯৯০ সালে প্রাক-স্বাধীনতা আমলের সিলেটের প্রথম জেলা প্রশাসক সৈয়দ নবীব আলীর দুই পুত্র সৈয়দ আজিজ উদ্দিন আহমদ ও সৈয়দ রফিক উদ্দিন আহমদ তাদের বাংলোবাড়ি দান করে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে এই কলেজটি এই এলাকার অন্যতম প্রধান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে কলেজটি টিকরপাড়া এলাকায় স্থানান্তরিত হয়।
তিনি বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নিয়মিতভাবে গভর্নিং বডির মাধ্যমে কলেজটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু ২০০৬ সালে দিলওয়ার হোসেইন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তিনি কলেজ প্রশাসনের একক আধিপত্য বিস্তার করেন। তার কারণে এরপর থেকে কলেজের গভর্নিং বডি গঠিত হয়নি।
কলেজ অধ্যক্ষ দিলওয়ার হোসেইনের অনিয়ম দুর্নীতির দালিলিক প্রমাণ দেন ইউপি চেয়ারম্যান আহবাবুর রহমান খান শিশু। তিনি সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার সাজিয়া জামানের তদন্ত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দেন সংবাদ সম্মেলনে।
২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি এবং ২০১৯ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃত করে চেয়ারম্যান আহবাবুর রহমান খান বলেন, সৈয়দ নবীব আলী কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মো. দিলওয়ার হোসেইন নিয়মিত গভর্নিং বডি গঠনে সুপরিকল্পিতভাবে অন্তরায় সৃষ্টি করেছেন। ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কলেজের বিভিন্ন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ।
এছাড়াও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ইংরেজি বিষয়ে পাঠদানের নামে অর্থ আত্মসাৎ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেন চেয়ারম্যান আহবাবুর রহমান।
তিনি বলেন, খণ্ডকালীন প্রভাষক হাবিবুল্লাহর নামে কলেজ তহবিলের টাকা আত্মসাৎ করেন অধ্যক্ষ। জানুয়ারি ২০১৩ থেকে মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত কলেজের মোট আদায়কৃত টাকার মধ্যে ৪৭ লাখ ২৪ হাজার ৫৮৪ টাকা ব্যাংকে জমা করা হয়নি। যা প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ৩, ৪ ও ৫ অনুচ্ছেদ পরিপন্থী। বিগত ১০ বছরের মধ্যে কলেজের কেবল ২০১৭-১৮ সালের অডিট হয়েছিল, এর আগে-পরে আর কোন অডিট হয়নি। অধ্যক্ষ দিলওয়ার হোসেইন পৃথক একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলে টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মেলে সহকারী কমিশনার সাজিয়া জামানের ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে।
আহবাবুর রহমান খান শিশু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনও সংবাদ সম্মেলনে উদ্ধৃত করেন। তিনি জানান, নিয়মিত অডিট হয় না, এবং টাকা ব্যাংকে পুরো জমা না করে আংশিক জমা করা হয়। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনেও প্রমাণিত হয়েছে।
১. এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষার জন্যে অতিরিক্ত টাকা কলেজ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। সেই টাকা কলেজ অধ্যক্ষ উন্নয়ন খাতে ব্যয় করেন বলে দাবি করলেও এর ভাউচার প্রদর্শন করতে পারেননি। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে পরীক্ষা খাতে আদায় অর্থ উন্নয়ন খাতে ব্যয় করার কোন অবকাশ নাই বলেও মন্তব্য করা হয়।
২. প্রশংসাপত্র খাতে কলেজ থেকে আদায়কৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় করা হয়েছে কিনা তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন অধ্যক্ষ, তদন্ত প্রতিবেদনে মন্তব্য।
৩. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অধ্যক্ষ মো. দিলওয়ার হোসেইনের নিয়োগ বিধিসম্মত হয়নি। ফলে তার বেতন ভাতা গ্রহণও অবৈধ।
৪. ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিয়ানীবাজারের তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, কলেজ অধ্যক্ষ মো. দিলওয়ার হোসেইন বিভিন্ন সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সাক্ষর জাল করে সভাপতির স্থলে দিয়ে কলেজের নামে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
আহবাবুর রহমান খান শিশু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে জানান, ২০১৪ সালের ৩০ জুনের পর থেকে কলেজের স্বীকৃতির নবায়ন না করায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম বাতিল করেছে।
-
সিলেটে বিদ্যুৎ ও পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তিতে নগরবাসী
-
শাবিতে বুলবুল হ-ত্যার ১ বছর : শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো অপূর্ণ
তিনি কলেজকে বাঁচাতে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক-এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন চারখাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন মুরাদ চৌধুরীও। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সৈয়দ নবীব আলী কলেজে আমাদের চারখাই ইউনিয়নের অন্তত তিনশ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। কোনোরূপ পূর্ব-ঘোষণা ছাড়া আজ কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যা উপস্থাপন করলেন তার অর্ধেকও যদি সত্য হয় তবে সেটাও আশঙ্কাজনক। এক্ষেত্রে এই কলেজকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে এই কলেজকে বাঁচাতে।
সংবাদ সম্মেলনে চারখাই ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন মুরাদ চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হেলাল চৌধুরী, ফখরুল আলম চৌধুরী, উবেদুজ্জামান চৌধুরী ছালাম, মোয়াজ্জেম হোসেন খান, আব্দুস সালাম, সালেহ আহমদ, একেএম কিবরিয়া, আব্দুল আহাদ চৌধুরী, রুমন আহমদ সোলেমান খাঁ, নাজমুস সাকির চৌধুরী, নাজমুল ইসলামসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রতিনিধিত্বশীল শতাধিক লোক এবং অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’