সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
শিকারীদের উৎপাতে কমে যাচ্ছে সুনামগঞ্জের বিজিবি ক্যাম্পের পাখি

ক্যাম্প এলাকাটিতে আগে এরচেয়েও বেশি পাখির উড়াউড়ির দৃশ্য দেখা যেতো। ছবি- আই নিউজ
সুনামগঞ্জে দেশীয় পাখির বিশাল একটি অভয়ারণ্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২৮ ব্যাটালিয়ন সুনামগঞ্জ সদর দপ্তর। সরকারিভাবে পাখি অভয়াশ্রম ঘোষণা না হলেও বনায়ন এবং উপযুক্ত পরিবেশ হওয়ায় হাজার হাজার লাল বক, সাদা বক, পানকৌড়ি, শামুকভাঙা, নীল ডুপি, টিয়া, শালিক, সহ নানান দেশি পাখির স্থায়ী বাসস্থান এখানে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে পাখি শিকারীদের উৎপাতের কারণে আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাছে এখানকার পাখির সংখ্যা।
সংরক্ষিত এলাকা হওয়ার ফলে নিরিবিলি পরিবেশে পাখিরা নিজেদের বেশি নিরাপদ ভাবে এখানে। বিজিবি সদস্যরাও নিজ উদ্যোগে বছরের পর বছর ধরে দেখাশোনা করে পাখিদের আবাসস্থল সংরক্ষণ করে আসছেন। তাই বিগত কয়েকবছর ধরে পাখির সংখ্যা ছিলো চোখে পড়ার মতো। শীত মৌসুমে এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। দেশী পাখির সাথে অতিথি পাখিরাও বাসা বাঁধে বিজিবি ক্যাম্পে। কিন্তু চোরা পাখি শিকারীদের উৎপাতে আর আগের মতো ভালো নেই এখানের পাখিরা। তাই এবছর পাখির সংখ্যা অনেকটা কমে গেছে। পাখি কমে যাওয়ায় কমে গেছে পাখিদের কলকাকলি। পাখি সংরক্ষণে বিজিবিকে আরও কঠোর হওয়ার আহবান স্থানীয়দের।
আগে ক্যাম্পের পাশের সড়কে মানুষ বিকেলে তাদের বাচ্চা নিয়ে এই পাখি দেখাতে নিয়ে আসতো। কিন্তু এখন ক্যাম্পের পাশে থেকেও পাখির সেই গন্ধ নেই। সব কমে যাচ্ছে। প্রত্যেকদিন ১৫-২০ টা পাখি মারা হয়। অনেকেদিন নিষেধ দিয়েছি কিন্তু কয়েকবার উলটো আমার উপর শিকারিরা চড়াও হয়েছে। এগুলো দ্রুত নজরদারির আওতায় আনা উচিত।
বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সারাদিন খাবারের সন্ধান শেষে গোধূলি সময় হাজার হাজার বক, পানকৌড়ি, শালিক, এসে ভীড় জমায় বিজিবি ক্যাম্পের আকাশে। মাঝে মাঝে বালিহাঁস সহ বণ্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত প্রাণীদেরও দেখা মিলেছে। গাছের ডালে বসার আগে ক্যাম্পের চারিদিক ঘুরে বেড়ায় একসাথে। আকাশে তখন শুধু পাখির মেলা দেখা যায়। ঠিক তখন ক্যাম্পের সীমানা দেয়ালের বাইরে অপেক্ষায় থাকা বড়পাড়া, তেঘরিয়া, লম্বাহাটি সহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার উঠতি বয়সী ২০-৩০ জনের কয়েকটি পাখি শিকারীর দল। পাখিরা নীড়ে ফেরার জন্য গাছের ডালে নামার আগ মূহুর্তে শূন্যে থাকা অবস্থায় শিকার করে পাখি। এসময় বেশ কয়েকটি পাখি শিকারের হাতে ধরা পড়লে তাৎক্ষণিক পাখি শিকারীদের কথা বিজিবি অধিনায়ককে জানালে কিছুক্ষণ পর বিজিবি সদস্যদের দিয়ে ধাওয়া দেয়া হয় শিকারীদের।
সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় পাখি শিকারীদের উৎপাত বাড়ায়, কমছে পাখির উপস্থিতি। ছবি- আই নিউজ
স্থানীয়রা জানান, প্রত্যেকদিন ১৫-২০ টি পাখি মারা পড়ে শিকারীর হাতে। আরও অন্তত অর্ধ শতাধিক পাখি আহত হয় শিকারীর গুলির আঘাতে। এভাবেই দিন দিন বিজিবি ক্যাম্পের বাইর থেকেই নষ্ট করা হচ্ছে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল।
ক্যাম্পের পাশের বাসিন্দা আকাশ বলেন, এখানের পাখিদের দেখলে মনে হয় এটা পাখিদের এলাকা। হাজারে হাজারে পাখি উড়ে বেড়ায় এখানে। যা দেখতেও খুব সুন্দর লাগে। কিন্তু ইদানিং যুবকদের দল এসে নিয়মিত পাখি শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় ভয়ে কিছু বলাও যায়না।
তেঘরিয়া গ্রামের যুবক আবু তালহা বলেন, আমরা যখন মাঠে খেলতে আসি তখন পাখি মারার এই নির্মম দৃশ্য দেখি। প্রত্যেকদিন নির্বিচারে মারা হচ্ছে পাখি। এরা সবাই ক্যাম্পের আশপাশের এলাকার। পাখি মারার কারণে এখন আর আগের মতো পাখি নেই। শিকারী দু একটাকে আটক করলেই অন্যরা ভয়ে আর পাখি শিকার করতো না।
নাম প্রকাশে ক্যাম্প সংলগ্ন বাড়ির এক যুবক বলেন, এখানের পাখির সংখ্যা এতো পরিমাণ ছিলো যে পাখির গায়ের ও বিষ্ঠার গন্ধ কয়েক মেইল দূর পর্যন্ত নাকে আসতো। ক্যাম্পের পাশের সড়কে মানুষ বিকেলে তাদের বাচ্চা নিয়ে এই পাখি দেখাতে নিয়ে আসতো। কিন্তু এখন ক্যাম্পের পাশে থেকেও পাখির সেই গন্ধ নেই। সব কমে যাচ্ছে। প্রত্যেকদিন ১৫-২০ টা পাখি মারা হয়। অনেকেদিন নিষেধ দিয়েছি কিন্তু কয়েকবার উলটো আমার উপর শিকারিরা চড়াও হয়েছে। এগুলো দ্রুত নজরদারির আওতায় আনা উচিত।
বিজিবির ২৮ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের ক্যাম্প পাখিদের নিরাপদ একটি স্থান। আমরা পাখিদের ক্ষেত্রে অনেক যত্নবান তাই তারা এখানে নির্বিঘ্নে থাকে। কিছু মানুষ এসে সীমানা দেয়ালের বাইরে থেকে পাখি শিকার করে ঠিক কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অপারেশন চালাচ্ছি।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’