নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারে নদ-নদীর পানি কমছে, ভেসে ওঠছে বন্যার ক্ষত
বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে গেছে একাধিক নদী বাঁধ। ছবি- আই নিউজ
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি আর উজান থেকে আসা পানিতে প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল মৌলভীবাজারের বেশকিছু নিম্নাঞ্চল। দুর্ভোগে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। হাজারো মানুষের জন্য স্বস্তি হয়ে দেখা দিয়েছে রোদ। বৃষ্টি কমায় কমছে মনু, ধলাই, কুশিয়ারা, জুড়ী নদীর পানিও। লোকালয় থেকে নেমে যাচ্ছে পানি। আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় বিপদের শঙ্কা দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা। তবে, পানি কমার সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ক্ষতের চিহ্নও বেরিয়ে আসছে।
শনিবার (২২ জুন) ভোররাতে বৃষ্টি হলেও সকাল থেকে সারাদিনই ছিল রৌদ্রময় উত্তপ্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে গত দুইদিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌলভীবাজারের প্রায় সব নদীতে বিপদসীমার নিচে নেমে এসেছে বন্যার পানি। দুই দিন আগেও যেসব নদী ছিল বন্যার পানিতে টুইটুম্বুর বর্তমানে সেখানে কমেছে পানির পরিমাণ। ফলে স্বস্তি পাচ্ছেন বন্যায় দুর্ভোগে থাকা মানুষরা।
সাম্প্রতিক বন্যায় মৌলভীবাজারে দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। ছবি- আই নিউজ
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া সবশেষ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে মৌলভীবাজারের প্রায় সবগুলো নদীতে পানি কমতির দিকে রয়েছে। মনু নদীর চাঁদনীঘাট পয়েন্টে শনিবার বিকেল তিনটায় পানি বইছিল ১০.৩৩ সে.মি উচ্চতায়। যা বিপদসীমার থেকে দশমিক ৯৭ সে.মি নিচে রয়েছে। বৃষ্টি না হলে পানি আরও কমবে।
একই অবস্থা ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রীজ পয়েন্টেও। গতকাল রাতে এই পয়েন্টে ১৬.৪৭ সে.মি উচ্চতা দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টায় ছিল ১৬.০১ সে.মি। যা বিপদসীমার থেকে ৩.৩৪ সে.মি নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে এখনো পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশার খবর হচ্ছে, এখানেও সময়ের সাথে সাথে কমছে পানি প্রবাহের পরিমাণ। গতকাল রাতে কুশিয়ারায় পানি প্রবাহিত হয়েছিল ৮.৫৫ সে.মি উচ্চতা দিয়ে। শনিবার বিকেল ৩টায় ৮.৬৭ সে.মি উপর দিয়ে বইছিল পানি। এখনও বিপদসীমার ১২ সে.মি উপর দিয়ে কুশিয়ারায় নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
নদ-নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসছে বন্যার ক্ষতচিহ্নও। ছবি- আই নিউজ
এছাড়া জুড়ী নদীতেও পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে জুড়ী নদীতে বিপদসীমার ১.৯৪ সে.মি উপর দিয়ে পানি বইছে। শনিবার বিকেল ৩টায় নদীতে ১০.৮৭ সে.মি উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
নদ-নদীতে পানি কমা শুরু হলেও এরিমধ্যে জেলার যেসব এলাকা বন্যার কবলে পড়েছে সেসব জায়গায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। কুলাউড়া, বড়লেখা, জুড়ী, কমলগঞ্জসহ মৌলভীবাজার সদর ও আশপাশের নিচু এলাকায় বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
বন্যার প্রাথমিক অবস্থায়ই নিজ উপজেলা কমলগঞ্জ পরিদর্শন করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। কুলাউড়ায় বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করেছেন এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। মৌলভীবাজার সদরের নিচু এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়েছেন পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান। এছাড়াও, মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি মো. জিল্লুর রহমান বন্যার্তদের মাঝে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নিয়েছেন।
এছাড়াও, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন এবং বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী।
শনিবার দুপুরের দিকে মাতারকাপন সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই বন্যার্ত মানুষের মাঝে চাল, শুকনো খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করেন।
বিতরণকালে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সিলেট বিভাগে ১৭০০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছিলো। এখন অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে বাড়িতে যাচ্ছে। তাদের ঘরবাড়ি আক্রান্ত হয়েছে। সেগুলো মেরামতে সময় লাগবে। আমরা সেখানেও তাদের পাশে থাকবো।
বন্যার্তদের সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন আশ্রয়কেন্দ্র খোলার পাশি, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দানের জন্য মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’