Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১০ ১৪৩২

রুপম আচার্য্য

প্রকাশিত: ১৭:১৯, ২৯ আগস্ট ২০২৪
আপডেট: ১৭:২২, ২৯ আগস্ট ২০২৪

শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন কর্মসূচি

ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা

তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আবর্জনার স্তুপ অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও মিছিল। ছবি আই নিউজ

তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আবর্জনার স্তুপ অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও মিছিল। ছবি আই নিউজ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও আবর্জনার স্তুপ অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বি*ক্ষো*ভ মিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ময়লার ভাগাড় দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়ে তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বাডস্ রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহস্রাধিক শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কর্মসূচি পালন করেন।

অন্তর্বতনীন কালীন সরকার ড. মো. ইউনুসের কাছে অনুরোধ ও জোর দাবী জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে ময়লার ভাগাড় অপসারণ করে আমাদের ভালোমতে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিতে হবে।’

কলেজ শিক্ষার্থী উম্মে নাফিসা মাইমুনাহ বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, আমাদের দাবী যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করা হোক। আর আমাদের দাবি যদি বাস্তবায়ন বা পূরণ না করা হয়, তাহলে অবস্থা কিন্তু বেশী ভালো হবে না। আমাদেরকে অনেকদিন ধরে আশা দিয়ে রাখছে, আমরা তুলে রাখছি। কথা কেউ রাখেনি! আমরা চাই, দ্রুত এই ময়লার ভাগাড় অপসারণ করা হোক। আমরা আর এই ময়লার ভাগাড়ে থাকতে চাই না। ময়লার ভাগাড়ের সামনে দিয়েও আর আসতে চাই না।’

দি বাডস্ রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান চৌধুরী বলেন, ‘বিগত ১৩ বছর ধরে এই কলেজে পড়াশোনা করছি। কিন্তু আমার ছোট ভাই একদিন আসলে দু'দিন আসতে পারে না। কারণ হচ্ছে, সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিভিন্ন রোগবালাই তার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায় ওর ফুড পয়জনিং হয়ে যায়। ক্লাসের মধ্যে হঠাৎ বাতাসে দুর্গন্ধ আসলে আমরা ক্লাস ঠিকভাবে করতে পারি না। দিনদিন শিক্ষার্থীরা কলেজে আসা কমে যাচ্ছে, একমাত্র এই ময়লার ভাগাড়ের জন্য। আমাদের দাবি, এই ময়লার ভাগাড়টা যেনো দ্রুত এখান থেকে সরানো হয়।’

একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘আমাদের দাবি একটাই ময়লার ভাগাড় অপসারণ করতে হবে। ময়লার দুর্গন্ধের জন্য শারীরিকভাবে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমাদের শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ প্রাচীন একটি বিদ্যাপিঠ, কিন্তু এখন শুধু ময়লার ভাগাড় দেখতে পাই। বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে চায় না। এই ময়লার স্তূপ দ্রুত অপসারণ করা প্রয়োজন। শ্রীমঙ্গলের মতো মঙ্গল শহরে একটি অমঙ্গল কাজ করা হচ্ছে। তারই একটা প্রমাণ হচ্ছে স্কুল কলেজের সামনে একটি ময়লার ভাগাড়।’

শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রশাসক এডিসি মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার বলেন, ‘তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে দীর্ঘদিন যাবত ময়লার ভাগাড় রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীসহ যারা আশেপাশে স্থানীয় বাসিন্দা রয়েছেন। স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে সবাই রয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে। এটি অপসারণের জন্য একটি পদক্ষেপও গ্রহন করা হয়েছে পৌরসভা থেকে, আমি যতটুকু জেনেছি। একটি জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, সেটি দখল হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে পৌরসভা কাজটি সমাপ্ত করতে পারেনি। আমি এখানে নতুন দ্বায়িত্ব নিয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থী যারা এসেছেন, সকলের বক্তব্য শুনেছি। অবশ্যই এটি একটি যৌক্তিক দাবি। এবং দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহন করার উচিত মর্মে আমিও মনে করি। যুক্তিসঙ্গত একটি দাবি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আগে নানান কারণে করা হয়নি, এখন আমরা এটি করতে চাই, এবং আমার যে আবেদন থাকবে এলাকাবাসীর প্রতি যে জায়গা থেকে ময়লার ভাগাড়টি সরিয়ে যেখানে নেওয়া হবে, বা দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে এবং অনেকগুলো কাজই সম্পন্ন করা হয়েছে। সেখানে সরানোর জন্য যাতে আমরা এলাকাবাসীর পূর্ণ সহযোগিতা পাই। কেউ যেনো আমরা না বলি, যে আমার এখান থেকে সড়ে যাক, কোথায় যাবে জানি না। অনেকেই যাতে না বলে, যে আমাদের এখানে রাখা যাবে না। কোথায় যাবে আমি জানি না।’

এর আগে বেলা ১১ টার দিকে শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজের সামনে তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। পরে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এক বি*ক্ষো*ভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি কলেজের সামনে থেকে শুরু করে চৌমুহনী চত্বরে এসে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। পরে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রশাসক এডিসি মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তারের কাছে স্মারকলিপি পত্র জমা দেন শিক্ষার্থীরা।

শ্রীমঙ্গল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ময়লার ভাগাড়টি স্থানান্তরের জন্য গত ২০১৭ সালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জেটি রোড এলাকায় ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা দিয়ে নতুন ভাগাড়ের জন্য ২.৪৩ একর জমি ক্রয় করা হয়েছিল। সে সময় জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় ওই এলাকার ফয়েজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি আদালতে মামলা করেন। এ মামলার প্রেক্ষিতে আদালত ২০২৩ সালের ১৩ মে পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

আই নিউজ

আরও পড়ুন
Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়