Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৯ ১৪৩২

সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী 

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ৭ অক্টোবর ২০২৪

নতুন শত্রুর উপদ্রবে হারাতে বসেছে জুড়ীর কমলা শিল্প 

উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৯৬.৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯৫ টি কমলা বাগান রয়েছে। ছবি- আই নিউজ

উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৯৬.৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯৫ টি কমলা বাগান রয়েছে। ছবি- আই নিউজ

নতুন শত্রুর আক্রমণে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে জুড়ীর কমলা শিল্প। একাধারে মারা যাচ্ছে পুরাতন কমলা গাছ। পাশাপাশি নতুন চারা বড় হওয়ার আগেই মারা যাচ্ছে। চতুর্মুখি আক্রমণ ঠেকাতে ব্যার্থ হচ্ছেন কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৯৬.৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯৫ টি কমলা বাগান রয়েছে। তন্মধ্যে গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নে আছে ৬২ হেক্টর। অত্রাঞ্চলের অধিকাংশ কমলা খাঁসি ও নাগপুরি জাতের আবাদ হচ্ছে।

গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের লালছড়া গ্রামের কমলা চাষি মোর্শেদ মিয়া জানান, তাঁর বাগানে প্রায় ১হাজার ৫শ' কমলা গাছ ছিল। গত ৩ বছরে ৪শ' গাছ মারা গিয়েছে। বাকি ৬শ' গাছের মধ্যে প্রায় ২শ' গাছ মারা যাওয়ার পথে। তিনি জানান, প্রথমে একধরনের সাদা পোকা মাটির নিচে কমলার শিকড় থেকে পানি চুষে ফেলে, পরে উইপোকা শিকড় খেয়ে ফেলে। প্রথম বছর গাছের পাতা হালকা হলুদ হয়, দ্বিতীয় বছর পাতা পুরোপুরি হলুদ হয়ে যায় এবং পাতা ঝরা শুরু হয়, তৃতীয় বছর গাছটি মারা যায়। মোর্শেদ জানান, পোকার আক্রমণের শুরুতে কমলার আকার স্বাভাবিক থাকলেও দ্বিতীয় বছর আকার ছোট হয় এবং পরের বছর একেবারে ছোট হয়ে যায়।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহমুদুল আলম খান বলেন, কমলা চাষীদের দেয়া তথ্য ও সম্প্রতি আমাদের পরিদর্শনে বেশ কিছু সমস্যা নির্ণয় করা হয়েছে। বাগানগুলো পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কিছুটা বেশি। উইপোকা, মিলিবাগ, ফোমিং এর পর বিটল, গান্ধী প্রজাপতির (ফুট সাকার) মত পোকার আক্রমণ আছেই। আমরা চাষিদেরকে বেশ কিছু কীটনাশক সরবরাহ করেছি। এরমধ্যে কিছু কাজ করেছে এবং কিছু করে নাই। কৃষি গবেষণা থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল নিয়ে আসা দরকার, কারণ এখানে অপরিচিত কিছু মথ আছে যেগুলোকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা সে পদক্ষেপ নিচ্ছি।

বিভিন্ন কারণে ধারাবাহিকভাবে কমছে এই গ্রামের কমলা চাষ। ছবি- আই নিউজ 


উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর জানান, সম্প্রতি কৃষি অফিসারসহ আমরা কমলা বাগান পরিদর্শন করেছি। সমস্যাগুলো বিশ্লেষণসহ সুপারিশ আকারে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে দিব যাতে করে কমলা চাষ সমৃদ্ধ হয় ও চাষিরা উপকৃত হন।

তিনি আরো বলেন, সিলেটের কমলার জন্য বিখ্যাত ছিলো জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা, লালছড়া, শুকনাছড়া, হায়াছড়া, কচুরগুলসহ বেশকিছু গ্রাম। কমলার জন্য দেশে ও দেশের বাইরে খ্যাতি ছিলো এই গ্রামগুলোর। এখানকার উৎপাদিত কমলা 'জুড়ীর কমলা' নামে পরিচিত ছিলো। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানলাম, বিভিন্ন কারণে ধারাবাহিকভাবে কমছে এই গ্রামের কমলা চাষ। গ্রামের অনেক চাষি কমলা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। আমরা উপজেলা প্রশাসন কমলা চাষের এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করব।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়