অঞ্জন রায়, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট: ০০:১৬, ১২ জুলাই ২০২১
লকডাউনে কেমন আছেন নিম্নআয়ের মানুষরা?
ফাইল ছবি
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের ১৩টি ইউনিয়নে উপজেলার ৮০% মানুষ কৃষি কাজ ও নিম্ন আয়ের কাজ করে। কঠোর লকডাউনে বাড়তি চাপ পড়েছে তাদের উপর। তার ওপর সামনে কোরবানির ঈদের আমেজ। ইতিমধ্যে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে এসেছেন বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত উপজেলার স্বল্প আয়ের মানুষজন। এতে ভয়াবহ করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থান না হলে বিপর্যয় নেমে আসার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
কেউ চালাচ্ছে রিকশা কেউবা আবার দৈনিক চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করে সংসারের অভাব অনটন দূর করলেও এখন আর তেমন কাজও নেই। করোনা আতঙ্কিত চারদিকে শুধুই শুন্যতা। এদিকে পরিবহণ শ্রমিকরা কঠোর লকডাউনের ফলে কর্মহীন অলস সময় পার করছে। ফলে সংসারের অভাব-অনটনে অর্ধহারে-অনাহারে জীবন কাটাতে হচ্ছে তাদের। এদিকে ব্যাটারি-চালিত অটো রিকশা ও মিশুক চালকেরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ পরিবহনগুলো চালাতে পারছে না। নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ হয়ে পড়েছেন কর্মহীন যা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক প্রভাব তৈরি করেছে।
কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষের সঞ্চয় ইতিমধ্যে ফুরিয়ে এসেছে। এতে অর্থনৈতিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সমাজের নানা স্তরে। মানুষের মনে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। তার ওপর কর্ম হারিয়ে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী গ্রামে যুক্ত হওয়ায় পড়ছে কাজের আকাল। অভাব-অনটনে পড়ে অনেকেই জীবিকার তাগিদে অসৎ পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
৫ সন্তানের পিতা নবীগঞ্জের চা ব্যবসায়ী ছালিক মিয়া বলেন, কঠোর লকডাউনের কারণে দোকান বন্ধ রেখেছি। ছেলে-মেয়ে সহ স্বামী-স্ত্রী আমাদের সাত জনের সংসার চা বিক্রি করে চলে। আয় বন্ধ থাকলে সংসার চলবে কি করে? গত লকডাউনের সময়ও দোকান বন্ধ ছিল। তখন জমানো টাকা ভেঙে সংসার চালিয়েছি। এখন ঘরে টাকা নেই। দিনের পর দিন দোকান বন্ধ থাকলে তো না খেয়ে মরতে হবে। সরকারের সাহায্য ছাড়া বেঁচে থাকার ঠাই থাকবে না।
নবীগঞ্জে কঠোর লকডাউন। ছবি: প্রতিনিধি।
নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানান, ব্যবসা করে যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার টেনেটুনে চলতো। কিন্তু বর্তমানে মানুষের সমাগম বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের নির্দেশে দোকান বন্ধ। এখন আমরা গরীব মানুষ কোথায় যাব? এভাবে চলতে তাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
নবীগঞ্জ পৌর শহরে লকডাউনের ১০তম দিন বিকাল ৩ টায় রিকশা চালক শফিক মিয়ার সাথে আলাপ হয়। লকডাউনে রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন কেন বলতেই তিনি বললেন, ভাই পেটের জ্বালায় ঘরে থাকা যায় না। আমরা সাধারণ মানুষ, আমরার খবর রাখে কে? পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। সকাল থেকে রিকশা নিয়ে ঘুরছি, রাস্তায় যাত্রী না থাকায় আয় রোজগার নেই বললেই চলে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, করোনা নয়, সরকার সাহায্য না করলে ছেলে মেয়েদের নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।
এদিকে কঠোর লকডাউনে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন উপজেলার অভ্যন্তরীণ রুটে চালাচলকারী বাসের হাজারো শ্রমিক। অন্যান্য জনপরিবহন শ্রমিকরা জানান, অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চালিয়ে তারা যা আয় করেন তা দিয়ে তাদের কোন রকমে সংসার চলে। এখন লকডাউনে খুব সমস্যার মধ্যে দিন পার করতে হচ্ছে। কাজ না থাকায় পরিবার পরিজনদের নিয়ে না খেয়ে কষ্টের দিন কাটাচ্ছেন তারা।
নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি উত্তম কুমার পাল হিমেল বলেন, গত বছরের লকডাউনের শুরুতেই সরকারের পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংগঠন দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষদের নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছিল। কিন্তু এবারের কঠোর লকডাউনে সরকারি অনুদান ছাড়া সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলো আর এগিয়ে আসছে না। সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে ভালো নেই নিম্ন আয়ের মানুষেরা। কঠোর লকডাউনে তাদের আয় একেবারে কমে গেছে। পরিবার চালানোর ন্যূনতম খরচটুকুও যোগাতে পারছেন না।
আইনিউজ/অঞ্জন রায়/এসডি
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’