কমলগঞ্জ প্রতিনিধি
দীর্ঘ ৭০ বছরেও স্বীকৃতি পাননি কমলগঞ্জের তিন ভাষাসৈনিক
মোহাম্মদ ইলিয়াস,সৈয়দ মতিউর রহমান ও মফিজ আলী
দীর্ঘ ৭০ বছরেও স্বীকৃতি পাননি কমলগঞ্জের তিন ভাষাসৈনিক। ভাষা আন্দোলনের এতো বছর পার হলেও মূল্যায়ন করা হয়নি এসব ভাষাসৈনিকদের।
বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখা এই তিন ভাষাসৈনিক হলেন প্রয়াত জননেতা সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াস, সাংবাদিক সৈয়দ মতিউর রহমান ও চা শ্রমিক নেতা মফিজ আলী।
দেশের বিভিন্ন অ লে ভাষা সৈনিকদের নামানুসারে বিভিন্ন সড়ক কিংবা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ অথবা বৃত্তি প্রদান করা হলেও এই দুই ভাষাসৈনিককে নিয়ে সরকারি-বেসরকারি কোন উদ্যোগ এখনও দেখা যায়নি। এর মধ্যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সরাসরি কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহাম্মদ ইলিয়াস। অন্যদিকে আঞ্চলিক পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন সৈয়দ মতিউর রহমান ও কমরেড মফিজ আলী। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাঁদের কেউই সঠিকভাবে মূল্যায়িত হননি।
আরও পড়ুন- মৌলভীবাজারে একদিনের ব্যবধানে শনাক্তের হার বেড়ে ১৯
এছাড়া উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে জন্ম নেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও প্রখ্যাত সাংবাদিক সৈয়দ মতিউর রহমান। তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় মৌলভীবাজারের স্কুল এবং কয়েকটি মাদ্রাসায় ছাত্র ধর্মঘট পালনের নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বে ওই সময় প্রতিবাদ সভা ও ছাত্র ধর্মঘট পালন হয় কমলগঞ্জ উপজেলা সদর, শমশেরনগর ও ভানুগাছ বাজারে।
স্থানীয়ভাবে ভাষাসৈনিক হিসেবে প্রয়াত সৈয়দ মতিউর রহমানকে একাধিক সংগঠন মরণোত্তর পদক দিলেও সরকারিভাবে কোনও মূল্যায়ন নেই।
অপরদিকে উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের ধূপাটিলা গ্রামে জন্ম গ্রহণকারী প্রয়াত মফিজ আলী ঔপনিবেশিক পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলনের সময়ে সিলেট ও শমশেরনগরকেন্দ্রিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ভাষা আন্দোলনের সেই পথ ধরেই তিনি প্রগতিশীল রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন এবং সর্বশেষ পূর্ব পাকিস্তান চা শ্রমিক সংঘের শ্রমিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ভাষা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক হিসাবে মফিজ আলীকে ২০০৩ সনে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা প্রদান করলেও আর কোনও মূল্যায়ন পাননি তিনি।
আরও পড়ুন- রেললাইন যাবে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে
প্রয়াত মফিজ আলীর ছেলে সাংবাদিক নুরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, ‘মাতৃভাষার জন্য জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানবাহিনীর সামনে রাজপথে আন্দোলন করেছেন বাবা। কিন্তু ৭০ বছর পার হলেও সম্মান স্বীকৃতি ম‚ল্যায়ন কিছুই পাননি। আমার বাবা মফস্বল থাকতেন, তাই হয়তো সরকারের নজর পড়েনি।’
কমলগঞ্জের লেখক-গবেষক আহমদ সিরাজ বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন ঢাকাকে কেন্দ্রবিন্দু করে সংগঠিত হলেও তা হয়ে উঠে বাঙালির জাতীয়তা তথা জাতিসত্ত্বার আন্দোলন। ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর ভাষাবিরোধী এ আন্দোলন একই সঙ্গে গ্রাম ও শহরকে যুক্তভাবে গড়ে উঠে। ফলে বিভিন্ন স্থানে এ আন্দোলনের চরিত্র অভিন্ন ছিল।
কমলগঞ্জের কুশালপুর গ্রামে জন্মগ্রহনকারী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস ভাষা আন্দোলনের ঢাকাকেন্দ্রীক নেতা হলেও তিনিও মূল্যায়িত হননি। তেমনি বৃহত্তর সিলেটের অন্তর্গত কমলগঞ্জের পতনঊষার ইউনিয়নের কীর্তিমান পুরুষ প্রয়াত সাংবাদিক সৈয়দ মতিউর রহমান ও শ্রমিক নেতা মফিজ আলী ভাষা আন্দোলনের দৃশ্যমান নেতা ছিলেন।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৫০ বছরেও তারা সেভাবে বিবেচ্য বা মূল্যায়িত হয়ে উঠেননি। এই দুই প্রয়াত নেতা মফস্বল অঞ্চলের অধিকারী হওয়ার কারণে কি তাদের ঠিকমতো বুঝে নেওয়া যাচ্ছে না এ প্রশ্ন এলাকার সচেতন মানুষের।
আইনিউজ/প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ/এসডিপি
আইনিউজ ভিডিও
এক হাটে বাজার করবে বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষ
মাসজুড়ে জমজমাট ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২২
ইউএনও সাবরিনার তৎপরতায় অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচলো বাড়িটি
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’