নিজস্ব প্রতিবেদক
‘এভাবে আর দিন চলছে না’

মানুষের জীবেনে নেমেছে বিপর্যস্ত
বন্যা বিধ্বস্ত করেছে জনজীবন। মানুষের জীবেনে নেমেছে বিপর্যস্ত। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বসতঘর ও হাটবাজার। তাই ছাতা মাথায় পানিতে পাটী নিয়ে দাঁড়িয়ে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ষাটোর্ধ্ব নিরেন্দ্র কুমার দাস। পাটী বিক্রির আয়ে চলতো তার সংসারের চাকা। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোন ক্রেতার দেখা পাচ্ছিলেন না তিনি। এসময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাটীশিল্পী ফরিন্দ্র দাসকে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিরেন্দ্র বললেন, ‘এভাবে আর দিন চলে না’।
নিরেন্দ্র কুমার দাস মৌলভীবাজারের বড়লেখার তালিমপুর ইউপির হাকালুকি হাওরপারের গগড়া গ্রামের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই বাপ-দাদার কাছ থেকে শেখা এই পেশাকে আকড়ে ধরে কোনমতে পরিবার নিয়ে দু’বেলা দুমুঠো খেয়ে-পরে তার সংসার চলছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওর পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে হাকালুকি হাওরের বাংলাবাজার তলিয়ে যাওয়ায় নিরেন্দ্র কুমারের মত অনেকে পড়েছেন চরম বিপাকে। কারণ বাজারে ক্রেতা না থাকায় পাটী বেচাকেনা বন্ধ। তবুও আশায় বুক বেধে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় পানিতে দাঁড়িয়ে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন নিরেন্দ্র।
- আইনিউজে আরও পড়ুন : বন্যার্ত মানুষের পাশে তরুণরা
উল্লেখ্য বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার ও তালিমপুর ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবার শীতল পাটী তৈরীর পেশায় নিয়োজিত। পাটী বিক্রির আয়েই চলে তাদের সংসার। সমস্থ সপ্তাহ পাটী তৈরী করে হাটবারে স্থানীয় দাসেরবাজার, বাংলাবাজার, কানুনগোবাজার ও ফকিরবাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। দুরদুরান্তের ক্রেতারা সেখানে গিয়ে পাটী ক্রয় করেন। অনেকেই বিদেশেও নিয়ে যান। কিন্তু প্রায় ১০ দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও হাটবাজার বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন হতদরিদ্র পাটীশিল্পীরা।
আলাপকাল পাটীশিল্পী নিরেন্দ্র কুমার দাস বলেন, ছোটবেলা থেকে পাটি তৈরি করে বিক্রি করছি। বাপ-দাদার কাছ থেকে এই কাজ শিখেছি। তাই অন্য কোন কিছুই শিখিনি। তিনি বলেন, এক সময় পাটীর চাহিদা ছিল। কিন্তু দিন দিন তা কমছে। তারপরও কোনমতে পরিবার নিয়ে খেয়েপরে বেঁচে আছি। কিন্তু কয়েকদিন ধরে বন্যার কারণে বাজারে ক্রেতা নেই। তাই পাটী বেচাকেনা একদম নেই। একারণে পাটী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। যদি ক্রেতা পাই তাহলে ঘরে চাল-ডাল নিতে পারবো। তিনি বলেন, বন্যার পানি ঘরে উঠেছে। কোনমতে ঘরে আছি। পানি বাড়লে অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে হবে। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। এই অবস্থায় কীভাবে খাবো, কীভাবে চলব তা নিয়ে চিন্তা করছি।
এসময় নিরেন্দ্রের পাশে থাকা পাটীশিল্পী ফরিন্দ্র দাস (৪৬) বলেন, পাটী বিক্রি করে আমাদের পরিবার চলে। বাজারে ক্রেতা নেই। তাই আজকে আর পাটী আনিনি। খুব কষ্ট করে ধার করে চলতে হচ্ছে। জানিনা কপালে কী আছে।
নিরেন্দ্র কুমারের মতো বাজারে পলিথিনে মুড়িয়ে পাটী হাতে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন রিশি কান্ত দাস (৫৫)। বাজারে ক্রেতা না থাকায় তাকেও অনেকটা হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
আইনিউজ/এসকেএস
আইনিউজ ভিডিও
বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হলো অবৈধ স্থাপনা-দোকানপাট
পানির নীচে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-জুড়ী সড়ক
মৌলভীবাজারে বন্যা, জলমগ্ন টিবি হাসপাতাল রোড
নিরাপদ আশ্রয়ের খুঁজে ছুটছেন সিলেটবাসী
চড়ক পূজা || Charak Puja Bangladesh || Traditional folk festival Hinduism-Subcontinent || Eye News
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’