নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার
আপডেট: ১৩:০২, ১৯ মে ২০২৩
বাংলাদেশে বাল্যবিবাহে সবার শীর্ষে মৌলভীবাজার
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ ও বিধিমালা ২০১৮ অবহিত ও পর্যালোচনা বিষয়ক সভায় জেলা প্রশাসক। ছবি- আই নিউজ
সারাদেশের পরিসংখ্যানে সিলেট বিভাগে বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি। আর সিলেট বিভাগের চারটি জেলার মধ্যে বাল্যবিবাহে এগিয়ে মৌলভীবাজার জেলা। মৌলভীবাজারে বাল্যবিবাহের হার ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এমনটাই জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম।
এ পরিস্থিতি উত্তরণে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে মৌলভীবাজার সার্কিট হাউসের মুনহলে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ ও বিধিমালা ২০১৮ অবহিত ও পর্যালোচনা বিষয়ক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপরোক্ত বিষয়গুলো উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রভাংশু সোম মহান।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা মহিলা বিষয়ক অফিসের উপ-পরিচালক শাহেদা আকতার। উপস্থিত ছিলেন- জেলা সমাজসেবা অফিসের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, এফআইভিডিবি এর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম মঞ্জু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মৌলভীবাজারে বাল্যবিবাহ পরিস্থিতি ও নিরোধে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন অংশগ্রহণকারীরা।
জেলা প্রশাসন, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতর এবং বেসরকারি সংস্থা এফআইভিডিবি যৌথভাবে এই আয়োজন করে। এতে জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা অংশগ্রহণ করেন।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মৌলভীবাজার জেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করার পরও বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ২০১৯ সালের পর থেকে করোনাকালীন মহামারির কারণে বাল্যবিবাহ বেড়েছে। তখন স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিলো। সকলে ঘরবন্ধি ছিলেন। তখন বাল্যবিবাহ বেড়েছে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ইভটিজিং, দারিদ্রতা, অসচেতনতার কারণেও বাল্যবিবাহ হয়ে থাকে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আমাদের দেশে মেয়েরা স্কুলে যাওয়ার সময় ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া দারিদ্রতাও একটা বিষয়। তখন বাবা-মা মেয়েকে বোঝা হিসেবে মনে করে। এ অবস্থায় মেয়েকে বিয়ে দিতে পারলে অভিভাবক স্বস্তিবোধ করেন। কিন্তু বিবাহের ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের শারীরিক গঠন, বুদ্ধিমত্তা ও আবেগ বিয়ের জন্য উপযুক্ত কিনা সেটা চিন্তা করতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ভূমিকা রাখতে হবে। সর্বোপরি সামাজিক সচেতনতার বিকল্প নেই।
সভায় সাংবাদিকেরা বলেন, মৌলভীবাজার চা বাগান, হাওর ও গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিবাহের হার বেশি। প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হওয়ায় অল্প বয়সে বিয়ের প্রথাও আছে।
সভায় বলা হয়, চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অনেক বিবাহিত মেয়ের পরীক্ষা দিচ্ছেন। এছাড়া সন্তানের মায়েরাও পরীক্ষা দিচ্ছেন। এমন আশংকাজনক নজিরও আছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, নারী শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া চা-বাগানে মাধ্যমিক স্কুল বেশি করে স্থাপন করতে হবে। এক্ষেত্রে মেয়েরা সচেতন হবে। অর্থনিতকভাবে স্বাবলম্বী ও সচেতন হবে। বাল্য বিবাহের হার কমবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধে উঠান বৈঠক, সচেতনতামূলক প্রচারণার পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে বাল্যবিবাহ যেন না হয় সেজন্য রেজিস্ট্রার (কাজী, হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক), সাব-রেজিস্ট্রার, জেলা রেজিস্ট্রার, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সকলের অংশগ্রহণে একটি সভাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া নিকাহ রেজিস্ট্রারদের রেজিস্ট্রার বহি অডিট করতে সভায় প্রস্তাব দেওয়া হয়।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’