নিজস্ব প্রতিবেদক, কুলাউড়া
ঐতিহাসিক চা শ্রমিক দিবসে কুলাউড়ায় চা শ্রমিক সমাবেশ

চা-শ্রমিক বিদ্রোহের ১০২ তম বার্ষিকী উপলক্ষে চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে কুলাউরার কালিটি চা-বাগানে চা-শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (২০ মে) বিকাল ৪ টায় সসংগঠনের কুলাউড়া উপজেলা কমিটির আহবায়ক বিশ্বজিত দাসের সভাপতিত্বে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে মুল্লুক চলো আন্দোলন এর ইতিহাস তুলে বক্তারা বলেন, ১৯২১ সালের ২০ মে চাঁদপুর স্টীমারঘাটে ‘মুল্লুকে চলো’ আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের উপর চা বাগান মালিকদের নির্দেশে বৃটিশ সরকারের আসাম রাইফেলস এর গুর্খাবাহিনী নৃশংসভাবে ও নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শতো শতো চা শ্রমিককে হত্যা করে।
বৃটিশ সরকার ও চা বাগান মালিকরা ভাল মজুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ভারতের অন্ধ্র, তেলেঙ্গানা, মধ্য, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশের দারিদ্রপীড়িত অসহায় মানুষদের চা শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেয়৷ জীবনের ঝুকি নিয়ে চা শ্রমিকরা জঙ্গল পরিস্কার করে, পাহাড় কেটে চা বাগান তৈরী করতে বাধ্য হয়। বিপরীতে তারা পেটের ভাত জুগাতে পারেনি; বরং অখাদ্য খেয়ে, অসুখে ভোগে, পোকা-মাকড় ও সাপের কামড়ে, বিশুদ্ধ পানির অভাবে কলেরাসহ নানা অসুখের কারণে তাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়ে। বাঁচার তাগিদে চা শ্রমিক নেতা পণ্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত এবং পণ্ডিত দেওশরণের নেতৃত্বে চা শ্রমিকরা বিদ্রোহ করে নিজ নিজ অঞ্চলে ফিরে যাবার জন্য ‘নিজ মুল্লুকে চলো’ আন্দোলন শুরু করে।
সিলেট অঞ্চল থেকে হাজার হাজার শ্রমিক রেল লাইন ধরে দিনের পর দিন পায়ে হেটে প্রায় দু’শো কিলোমিটার পথ চলতে চলতে চাঁদপুর এর মেঘনা নদীর স্টীমারঘাটে এসে জড়ো হয়। পথে অনেক শ্রমিক অসুখে, অনাহারে মৃত্যুবরণ করে। কলকাতার উদ্দেশ্যে স্টীমারে উঠতে গেলে মালিকপক্ষের মদদে বৃটিশ সরকারের গুর্খাবাহিনী শ্রমিকদের বাঁধা দেয় এবং গুলি চালিয়ে নৃশংসভাবে শতো শতো চা শ্রমিককে হত্যা করে মৃতদেহ মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। শ্রমিকদের রক্তে মেঘনা নদীর পানি লাল হয়ে যায়। তারা নিজ মুল্লুকে আর ফিরে যেতে পারেনি। বৃটিশ সৈন্যদের হাত থেকে ঐদিন যারা রক্ষা পেয়েছিল, তাদেরকেও আন্দোলন করার অপরাধে নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল।
চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এস এম শুভ সমাবেশে দাবি জানান, পূর্ণ বকেয়া মজুরি পরিশোধ করতে হবে, ২০২৩- ২০২৪ সালে চা-শ্রমিকদের মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে, চা-জনগোষ্ঠীর ভূমির আইনি অধিকার নিশ্চিত করতে হব, অস্থায়ী চা-শ্রমিকদের স্থায়ী করতে হবে, ২০ মে মুল্লুক চলো আন্দোলন স্মরণে রাষ্ট্রীয়ভাবে "চা-শ্রমিক দিবস" ঘোষণা এবং সবেতন ছুটি দিতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে সভার সভাপতি বলেন, চা-শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমেই অধিকার আদায় করে নিতে হবে।
এদিন চা-শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এস এম শুভ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, কুলাউড়া উপজেলা কমিটির সভাপতি কমরেড আব্দুল লতিফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোশাররফ আলী, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য কৃষন দাস অলমিক, পূরণ ওরাং, কালিটি চা-বাগানের শ্রমিক অনিমা অলমিক, দয়াল অলমিক, আরতি দাস, বোরহাননগর চা-বাগানের শ্রমিক ঠাকুর রাজোয়ার।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’