হোসাইন আহমদ, মৌলভীবাজার
আপডেট: ১৭:৫৪, ৫ অক্টোবর ২০২৩
বিশ্ব শিক্ষক দিবস: দুই টাকার শিক্ষক ফজলু এখন ফেরিওয়ালা
দুই টাকার শিক্ষক ফজলু মিয়া তাঁর সাইকেলের সাথে। ছবি- আই নিউজ
বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে পড়াতেন। তিনি কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক না হলেও সমাজের ঝরে পড়া প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পড়ানো তার নেশা ছিল। টাকার দিকে প্রাধান্য না দিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সন্তানদের পড়াতেন দুই টাকার শিক্ষক হিসেবে খ্যাত ফজলু মিয়া। আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আই নিউজে থাকছে শিক্ষক ফজলু মিয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন।
পড়ানোর বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিদিন ২টাকা করে নিতেন ফজলু। আবার কেউ টাকা দিতে না পারলেও চাপ প্রয়োগ করতেন না। যার ফলে এলাকায় তার নাম পড়ে দুই টাকার শিক্ষক। এলাকার সবার কাছে তিনি দুই টাকার শিক্ষক হিসাবে পরিচিত পান। বর্তমানে বয়েসেরভারে শিক্ষার্থীদের পড়াতে পারছেন না। অভাবের সংসারে পড়ছে টানাপোড়ন। জীবিকার তাগিতে বাধ্য হয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের শিক্ষা সামগ্রী বিক্রি করছেন। শিক্ষার প্রতি তার দরদ রয়েছে।
জানা যায়, ফজলু মিয়া মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার সারমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু জটিল রোগের কারণে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারেননি। এরপর থেকেই তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো শুরু করেন। ফজলু মিয়ার এক ছেলে। সেই ছেলেটিও মানুষিক ভারসাম্যহীন। মারা গেছেন স্ত্রীও। নিজে রান্না করে খান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জুনেদ মিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি ফজলু মিয়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াতেন। বিশেষ করে তার এই মহতি উদ্যোগে উপকৃত হয়েছেন সমাজের পিছিয়ে থাকা পরিবারের শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে কিছুটা মানুষিক ভারসাম্যহীন হয়ে ফজলু মিয়া মানবতের জীবনযাপন করছেন।
ফজলু মিয়ার ছাত্র ও পাঁচগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মনসুর আলী বলেন, “আমরা যখন পড়েছি তখন কে টাকা দিল আর কে দিলও না সেটা তিনি। দেখতেন না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবাইকে একত্রিত করে পড়াতেন। স্যারের কল্যাণে আমরা অনেকে পড়ালেখা করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে বয়েসের ভারে স্যার পড়াতে পারেন না। লেখাপড়ার প্রতি দরদ থাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের শিক্ষা সামগ্রী বিক্রি করে কোনোরকমে চলেন। তিনি সত ও ন্যায় পরায়ন শিক্ষক।
জাকারিয়া নামের ফজলু মিয়ার অপর শিক্ষার্থী বলেন, স্যারের কাছে আমরা যখন পড়তাম তখন অন্যান্য শিক্ষকরা মাসিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা নিতেন। কিন্তু ফজলু স্যার নিতেন মাসে ৬০ টাকা। আবার কেউ কেউ টাকা না দিতে পারলেও পড়ানো বাদ দিতেন না। বিশেষ করে গণিত ও ইংরেজি তিনি খুব ভালো করে পড়াতে পারতেন।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’