Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৪ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ২০:০২, ৭ নভেম্বর ২০২৩
আপডেট: ২০:৫৫, ৭ নভেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদক জিতে এসেছেন মৌলভীবাজারের মনা

আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদক সাথে ফয়জুল হক মনা। ছবি- আই নিউজ

আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদক সাথে ফয়জুল হক মনা। ছবি- আই নিউজ

বাংলাদেশের কৃতি অ্যাথলেট মৌলভীবাজারের সন্তান ফয়জুল হক মনা। সম্প্রতি তিনি অসাধারণ প্রতিভা দেখিয়ে ভারতের অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাস্টার অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৩-এ দুইটি স্বর্ণপদক এবং একটি রৌপ্যপদক জিতেছেন।

গত ৪-৫ নভেম্বর ভারতের কোচবিহারে মাস্টার্স গেমস অ্যাসোসিয়েশন, বেঙ্গল কোলকাতার ব্যবস্থাপনায় ও কোচবিহার মাস্টার্স স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় “আন্তর্জাতিক আমন্ত্রণমূলক মাস্টার্স গেমস’ অনুষ্ঠিত হয়। মৌলভীবাজারের ফয়জুল হক মনা বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন থেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তিনি ট্রিপল জাম্প ও হাই জাম্পে ১টি করে ২টি স্বর্ণপদক এবং লং জাম্পে ১টি রৌপ্যপদক অর্জন করেন। 

আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা স্টেডিয়ামে ফয়জুল হক মনাকে ফুলেল সম্বর্ধনা দেয়া হয়। বেলা ৪টার দিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় এসে পৌঁছালে স্বর্ণজয়ী এই ক্রীড়াবিদকে উষ্ণ স্বাগত জানান উপস্থিত সকলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও পৌর কাউন্সিলর নাহিদ হোসেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব ইজদানি ইমরান, মৌলভীবাজার জেলা ফৃুটবল এসোসিয়েশন তনজু খান, জেলা ক্রীড়া অফিসার মাজহারুল মজিদ, মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটির ইমন আহমদ প্রমুখ। 

এ সময় মৌলভীবাজার অ্যাথলেটিক্স এন্ড কাবাডি শিক্ষার্থীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থা তাঁকে ফুলেল সম্বর্ধনা দেয়।
  
ফয়জুল হক আই নিউজকে বলেন- ‘১৯৯৮ সালে আমাকে ডাক বিভাগ আমাকে ডাক দেয়। তারা আমাকে বলে 'তুমি যদি আমাদের হাই জাম্পে একটা পদক দিতে পারো, তোমাকে ডাক বিভাগে চাকরি দেবো।' সেই জেদকে কাজে লাগিয়ে তখন স্বর্ণ পদক এনে তাদের উপহার দেই। ডাক বিভাগে আমার চাকরি হয়। আমি এখন ডাক বিভাগে কর্মরত একজন গর্বিত অ্যাথলেট। আগামীতে ইউরোপে একটি প্রতিযোগিতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

মনা বলেন- ‘ খেলা ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না। খেলা আমার নে শা য় পরিণত হয়ে গেছে। তবে আমার এই যাত্রায় অনেক কষ্ট আর সংগ্রাম করতে হয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা অনেক সহযোগিতা করেছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান অনেক সহযোগিতা করেছেন। যখন যে সহযোগিতা ছেয়েছি তিনি পাশে থেকেছেন। সকল শুভানুধ্যায়ীর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা’

মৌলভীবাজার জেলার হয়ে জাতীয় পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি পদক জয়ী ক্রীড়াবিদ মো. ফয়জুল হক মনা। তাঁর জন্ম ১৯৮৫ সালের ৫ জুলাই মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বলিয়ার বাগ গ্রামে। তাঁর বাবার নাম নসিব উল্লাহ এবং মা খুশবা বেগম। তিনি মৌলভীবাজার জেলা কাবাডি দলের অধিনায়ক। যার অধিনাকত্বে মৌলভীবাজার জেলা কাবাডি দল বর্তমানে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন। 

মনা ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা ভালোবাসতেন। ২০০০ সালে অ্যাথলেটিকস শুরু করেন। ২০১০ সালে খেলার প্রতিভায় মৌলভীবাজার প্রধান ডাকঘরে চাকরি পান ।

জানা যায়- ফয়জুল হক মনা ২০১০ সাল থেকেই জাতীয় পর্যায়ে পদক অর্জন শুরু করেন। ডাক বিভাগের অ্যাথলেটিকস খেলায় পরপর সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। 

তিনি দ্বিতীয় জাতীয় মাস্টার্স অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় ২০১৭ সালে হাই জাম্প, লং জাম্প ও ট্রিপল জাম্প ৩টি বিভাগে স্বর্ণ পদক এবং ১০০মিটার দৌড়ে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন। ২০০৩ সালে মুন স্টার ক্লাবের হয়ে মৌলভীবাজারে দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল খেলেন। একই বছর মৌলভীবাজারের একটি ক্লাবের হয়ে ক্রিকেট খেলেন।

অ্যাথলেটিকসের সাথে ফুটবল, ক্রিকেটও চালিয়ে যান মনা। তিনি ২০১০ সালে কাবাডিতে আসেন। ওই বছরই মৌলভীবাজার জেলা কাবাডি দল কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক কাবাডি প্রতিযোগিতায় রানার্স আপ হয়। ‘মনা’ ছিলেন সেই দলের একজন গর্বিত সদস্য। যাত্রার শুরু সেখান থেকেই। ২০১৭ সালে মনার নেতৃত্বে মৌলভীবাজার জেলা কাবাডি দল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়।

২০১৭ সালে মনা কাবাডি রেফারি হিসেবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। মনা ২০১৬ সালে বক্সিং কোচিংয়ের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান বলেন- ‘ফয়জুল হক মনার কৃতিত্বে আমরা মৌলভীবাজারবাসী গর্বিত। ছোট্ট করে হলেও ক্রীড়া সংস্থায় উপস্থিত সকলেই তাঁকে তাৎক্ষণিক ফুলেল সম্বর্ধনা দিয়েছে। মনার মাধ্যমে আমরা মৌলভীবাজার জেলার অ্যাথলেটিক্সকে জাগ্রত করবো। মনার মতো আরো অনেক মনা জাতে সৃষ্টি হয় এই লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো। মনার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায় থেকে যেন আমরা অ্যাথলেটিক্সে স্বর্ণ পদক ছিনিয়ে আনতে পারি- প্রত্যাশা করছি।’ 

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়