Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১০ ১৪৩২

এ. জে লাভলু, বড়লেখা 

প্রকাশিত: ১৮:৪২, ২০ জুন ২০২৪

বড়লেখায় ২৫২টি গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি প্রায় ১ লাখ মানুষ 

ছবি- আই নিউজ

ছবি- আই নিউজ

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি ভ*য়াবহ রূপ ধারণ করছে। ইতিমধ্যে বন্যায় উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২৫২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। এতে প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। 

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২২টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঘরে ঠিকতে না পেরে ৬০০ মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব কেন্দ্রে শুকনো খাবার ও স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। যদিও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে বন্যার্ত লোকজন জানিয়েছেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজরাতুন নাঈম বুধবার (১৯ জুন) দুপুরে জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২৫২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যা পরিস্থিতি মোকায়বেলায় প্রশাসন সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। ২২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে ৬০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এসব পরিবারের মাঝে খাবারের পাশাপাশি শুকনো খাবার ও স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকায় সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সোমবার থেকে বড়লেখায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাকালুকি হাওরের পানি বাড়ছে।  বুধবার (১৮ জুন) সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরেছে। ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে উপজেলার তালিমপুর, বর্ণি, সুজানগর, দাসেরবাজার, উত্তর শাহবাজরপুর, দক্ষিণ শাহবাজপুর, নিজবাহাদুরপুর, দক্ষিণভাগ উত্তর,  দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ও বড়লেখা সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব গ্রামের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। এতে প্রায়  হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরে ঠিকতে না পেরে অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে যাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

বর্ণি ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন বলেন, আমার পুরো ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত। বড়লেখা সদরের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। আমার ইউনিয়নের মানুষের জীবন প্রায়ই অচল। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্ধি। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। পানি বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে জানান তিনি।

উত্তর শাহবাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ বলেন, আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে পানি ঢুকেছে। এরমধ্যে ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। 

তালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান এখলাছ উদ্দিন বলেন, তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকেছে। কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে বেশ কয়েকটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ঢলের পানিতে ১৭৪ হেক্টর আউশ ধান এবং ৭ হেক্টর গ্রীস্মকালীন শাক-সবজি নিমজ্জিত রয়েছে। পানি আরও বাড়লে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।  

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান বলেন, আমরা বন্যার্ত পরিবারের জন্য ঊর্ধ্বতনের কর্তৃপক্ষের নিকট শুকনো খাবারের চাহিদা পাঠিয়েছি। খাবার পাওয়া গেলে তা দুর্গত পরিবারগুলোর মাঝে বিতরণ করা হবে।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান বলেন, বন্যায় বড়লেখা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২৫২ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মানুষজন খুবই বিপাকে পড়েছেন। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আমরা বন্যার্ত এলাকায় যাচ্ছি। মানুষের তথ্য সংগ্রহ করছি। পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা দেয়া হবে।

আই নিউজ/এইচএ 

আরও পড়ুন
Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়