Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৯ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ১৬:১৫, ১০ জুলাই ২০২৪

প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী মৌলভীবাজারের রাজচন্দ্রের জমিদার বাড়ি 

সাধুহাটি এলাকায় অবস্থিত জমিদার রাজচন্দ্রের পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ি।

সাধুহাটি এলাকায় অবস্থিত জমিদার রাজচন্দ্রের পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ি।

মৌলভীবাজারের ইতিহাস অনেক পুরোনো। সেই মহাভারত যুগেও পাওয়া যায় এ অঞ্চলের উল্লেখ। ফলে, এখনো মৌলভীবাজারের নানান জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইতিহাসের নানা পর্বের বিভিন্ন নিদর্শন। যেসব জায়গা প্রাচীন ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে টিকে আছে এখনো। তেমনি একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক জায়গা মৌলভীবাজার সদরের সাধুহাটি এলাকায় অবস্থিত জমিদার রাজচন্দ্রের পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ি। 

জানা যায়, দেয়ালের প্রাচীর ক্ষয়ে যাওয়া পুরোনো এ জমিদার বাড়িটি ব্রিটিশ আমলের এক জমিদারের। তাঁর নাম জমিদার রাজচন্দ্র। সম্ভবত ঢাকাবাসী এই জমিদার ইংরেজদের কাছ থেকে জমিদারি কিনে এ অঞ্চলে আসেন। মৌলভীবাজারের সাধুহাটি এলাকাসহ আশপাশের এলাকা জুড়ে ছিল তাঁর জমিদারি। প্রায় দেড় ফুট পুরু দেয়াল দিয়ে ঘেরা পরিত্যক্ত এই জমিদার বাড়িটি এখন সেই সময়েরই কথা বলে যেন।

ছবি- আমির মিয়া 


সরেজমিনে জমিদার বাড়ি ঘুরে দেখা যায়, জমিদার বাড়ির পাশেই রয়েছে সুবিশাল দিঘী। এখনো দিঘী পানিতে পরিপূর্ণ থাকে সবসময়। এলাকার মানুষের নানা কাজে আসে এই দিঘীর পানি। দিঘীর পাশেই আবার জমিদার বাড়িতে প্রবেশের মুখে সিড়িঘরে হাওয়া খানা। মনোরম পরিবেশে এখানেই বসে নাকি জমিদার বাড়ির লোকজন বিচার-আচার করতেন। যদিও হাওয়া খানা এখন সাপ-বিচ্ছুর আবাসস্থল। রয়েছে চাকর-চাকরানী, বাবুর্চিদের থাকার ঘর। জমিদার বাড়িটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। জমিদার রাজচন্দ্রের কোনো উত্তরসুরী এখানে না থাকায় অবহেলা, অযত্নে নষ্ট হয়ে গেছে একসময়ের ঝাকঝমক পূর্ণ এই জমিদার বাড়ি। 

জনশ্রুতি আছে, জমিদার রাজচন্দ্র তাঁর ভাই সূর্য নারায়ণ চন্দ্রসহ তাঁর অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে  ১৮৮৫ সালে সাধুহাটির জমিদারি ছেড়ে চলে যান চলে যান। কেউ কেউ অবশ্য বলেন তারা পালিয়ে গিয়েছিলেন। মূলত, জমিদার রাজচন্দ্র ছিলেন একজন অত্যাচারী জমিদার। জমিদার বাড়িতে সেসময় একটি টর্চার সেলও ছিল। যেখানে এনে মানুষদেরকে নির্যাতন করা হত। ফলে, এ অঞ্চলের মানুষ জমিদারকে পছন্দ করতো না। তাঁর উপর এই জমিদার স্থানীয় ছিলেন না। এসেছিলেন ঢাকা থেকে। ফলে, সাধুহাটিতে যখন জমিদারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবাই ক্ষেপে উঠল তখন তারা পালিয়ে যান।

ছবি- আমির মিয়া 


সাধুহাটির এই জমিদার বাড়ির বয়স দেড়শ বছরেরও বেশি। জমিদার বাড়িটি এখনো কোনোমতে টিকে আছে। অনেক জায়গায় খসে পড়েছে দেয়ালের পলেস্তারা। জমিদার বাড়ির অনেক জায়গাতেই আগাছা, শেকড়বাকড় জন্ম নিয়েছে। ভয়ে এখন আর তেমন কেউ এদিকে আসেননা। মাঝে মাঝে ইতিহাস সন্ধানী মানুষজন আসেন পুরোনো এই জমিদার বাড়ি দেখতে। মানুষের কতোকথার মধ্য দিয়ে এভাবেই মাঝেমাঝে এখনো প্রসঙ্গে আসে সাধুহাটির এই জমিদার বাড়ির কথা। 

আই নিউজ/এইচএ 

আরও পড়ুন
Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়