Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৮ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৪৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সংবাদ সম্মেলন

চা শ্রমিকদের শতকরা ৫ শতাংশ মজুরী ঘোষনা প্রত্যাখ্যান

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পাল। ছবি: আই নি

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পাল। ছবি: আই নি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের শতকরা ৫ শতাংশ মজুরী ঘোষনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বছরের ১০ আগস্ট শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় এর নিম্নতম মজুরী শাখা কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটে চা বাগান শিল্প সেক্টরে চা শিল্পের শ্রমিকদের এ মজুরী ঘোষনা করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয় (লেবার হাউজ) এর হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পাল।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মূল বাগান ও ফাঁড়ি বাগানসহ মোট ২৩০টি চা বাগান বিদ্যমান। চা উৎপাদন পাকিস্তান আমলে আভন্তরিন বাজার ও বিদেশে রপ্তানী করলেও মাত্র ৩ (তিন) কোটি কেজি চা উৎপাদীত হতো। বর্তমানে প্রায় ১০২.৯২ কোটি কেজি চা উৎপাদিত হচ্ছে। প্রায় ৫ গুন চা উৎপাদিত হলেও কর্মরত স্থায়ী ও ক্যাজুয়েল শ্রমিকদের সংখ্যা খুব একটা বাড়েনি, শ্রমিকদের মজুরী ও অনন্যা সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি হয়নি।’

নিপেন বলেন, ‘মজুরী বোর্ডের প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী তফসিল (খ) এর ৩নং উপধারায় বর্নিত স্থায়ী/সাময়িক ক্যাজুয়্যাল শ্রমিকদের জন্য এ.বি.সি. এই তিন শ্রেনীতে বিভক্ত করে যথাক্রমে ১৭০, ১৬৯, ১৬৮ টাকা এলাকা ভেদে মজুরী ঘোষনা করা হয়েছে। যা চা শ্রমিকদের কাম্য নয়। কিন্তু মজুরী বোর্ডের প্রকাশিত গেজেটে কেন এটা কমিয়ে ১৬৯ টাক হতে ১৬৮ টাকা করা হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকদের মজুরী নির্ধারনের অব্যাহত ধারা ইংরেজ শাষনামলের পর মালিক পক্ষের সংগঠন বিটিএ (বাংলাদেশীয় চা সংসদ) এবং বিসিএসইউ (বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন) একটি দ্বি-পাক্ষিক শ্রমচুক্তির মধ্য দিয়ে দাবীনামা উত্থাপন ও আলোচনা শেষ হওয়ার সময় পর্যন্ত শ্রমিকদের বর্ধিত মজুরী যত বকেয়া পাওনা হয়, তাহা ২ থেকে ৩ কিস্তিতে সমভাবে শ্রমিকদের পরিশোধ করা হয়।’

নিপেন নলেন, ‘শ্রম আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তফসিল (ঘ) বর্নিত মজুরী বোর্ডের প্রকাশিত গেজেটে ৫নং এর (ক) উপধারায় উৎসব ভাতা ৪৭ দিনের সুপারিশ করা হয়েছে। অথচ আমরা জানি শ্রম বিধিমালা ১১১(৫) ধারা অনুযায়ী ৬০ দিনের মূল মজুরী সমান ২ উৎসবে দেওয়া হবে। চা শ্রমিকদের বর্তমান মূল মজুরী হলো ১৭০ টাকা, সেই হিসেবে বিধিমালায় বর্নিত ৬০ দিনের মজুরীর চা শ্রমিক উৎসব ভাতা হিসেবে পাবে। তাও আবার কাজের দিন হিসাব করে বেশ কম করা হয়।’

নিপেন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ গেজেট প্রকাশিত এর তফসিল (ঙ) শর্তাবলী (৭) এর প্রকাশিত যা চা শ্রমিকদের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে ও মালিকের স্বার্থ রক্ষার্থে মালিকপক্ষের সুপারিশকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশীয় চা সংসদ এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন এর দ্বি-বার্ষিক, দ্বি-পাক্ষিক শ্রমচুক্তিতে শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা উৎপাদনশীলতা প্রভৃতি বিষয়ে সমঝোতার মাধ্যমে সিন্ধান্ত গ্রহনের কথা বলা আছে, কিন্তু মজুরী নির্ধারনের বিষয়ে কিছু বলা নেই অর্থাৎ শ্রমিকদের মজুরী নির্ধারনের শ্রমচুক্তিকে খুব করা হয়েছে। যা চা শিল্পের জন্য অশনি সংকেত বলে চা শ্রমিকরা মনে করছেন। উপরোক্ত মতামতের ভিতিতে এই মজুরী বোর্ডের প্রকাশিত গেজেট গ্রহনযোগ্য নয় বলে আমরা মনে করি।’

বিগত সরকারের এই প্রকাশিত মজুরী বৈষম্য গেজেট চা শ্রমিক বান্ধব হয়নি। তাই নতুন একটি বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আশু হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, কোষাধ্যক্ষ পরেশ কালিন্দী প্রমুখ।

আরএ/আই নিউজ

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়