Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৮ ১৪৩২

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:১৮, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

জুড়ীতে কম খরচে মাল্টা চাষ করে ভাগ্য ফেরানোর চেষ্টায় চাষীরা 

জুড়ীর একটি মাল্টা বাগানের চিত্র।

জুড়ীর একটি মাল্টা বাগানের চিত্র।

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা একসময় স্থানীয় সুস্বাদু কমলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত হলেও, বর্তমানে এখানে ব্যাপক হারে বেড়েছে মাল্টার চাষ। কমলার পাশাপাশি, কম খরচে মাল্টা চাষের মাধ্যমে জীবন স্বস্তি খুঁজছেন এখানকার অনেক চাষী। চাষীদের আগ্রহের কারণে এগিয়ে এসেছে সরকারও। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে জুড়ীতে এখন অনেক জায়গায় শুরু হয়েছে মাল্টার চাষ। মাল্টা চাষ করে কম খরচে স্বাবলম্বী হবার স্বপ্ন দেখছেন সাধারণ চাষীরাও। 

স্থানীয়ভাবে জুড়ীতে প্রতিবছর বাড়ছে মাল্টা বাগানের সংখ্যা। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের পাশাপাশি অনেক যুবক শখের বশেও মাল্টা চাষে উদ্যোগী হচ্ছেন। কেউ কেউ এর জন্য সহায়তা নিচ্ছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকেও। 

কৃষি বিভাগ জানায়, মাল্টা দেখতে সবুজ হলেও খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু ও মিষ্টি। বারি-১ জাতের এ মাল্টার উৎপাদন বাড়ছে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে। সম্ভাবনাময় এ ফসল চাষাবাদে তুলনামূলক খরচ কম থাকায় সহজে ফলন হয়। সে জন্য কৃষকরা ঝুঁকছেন এখন মাল্টা চাষে। 

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জুড়ী উপজেলায় ২৪ হেক্টর জমিতে মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে। গত বছর যা ছিল ২১ হেক্টর। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে কমবেশি হচ্ছে মাল্টার আবাদ। রয়েছে ছোট-বড় শতাধিক বাগান। জুড়ী উপজেলার পূর্বজুড়ী, ফুলতলা, সাগরনাল ও গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে এর ফলন হচ্ছে বেশি। কেউ করেছেন সখের বসে চাষাবাদ, আবার কেউ কেউ বাণিজ্যিক চিন্তাধারা নিয়ে। এ বছর জুড়ীতে মাল্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৭ টন।

সরজমিনে পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের সাগরনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে বড় বড় দুটি পাহাড়ে ১২ শতাধিক মাল্টার গাছ দিয়ে তৈরি বিশাল বাগান। এখানে মাত্র ৩ বছর পূর্বে প্রায় সাড়ে ৩ একর জমিতে মাল্টা চাষ শুরু করেন এক স্থানীয় যুবক। গত বছর থেকে তিনি এ বাগান থেকে মাল্টা পাচ্ছেন। মাল্টার পাশাপাশি তার একই টিলা ভূমিতে রয়েছে কমলা ও জারালেবু। এবং পাশের জমিতে রয়েছে মাছের ঘের, হাঁস-মুরগি ও গরু ছাগলের খামার। কিছুটা সরকারি হলেও বাকি সম্পূর্ণ করেছেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে।

বাগানের নিয়মিত পরিচর্চা করা এক শ্রমিক জানান, এ বছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে। গাছের চেয়ে ফল বেশি হওয়ায় ফুল থাকতেই মেডিসিন দিয়ে ঝরানো হয়েছে। অতিরিক্ত ফল হলে গাছ দুর্বল হয়ে যায়। তাই কৃষি অফিসারের পরামর্শে এ কাজ করা হয়। আগামী বছর থেকে গাছে যে ফল আসবে, সবগুলো রাখা যাবে।' 

তিনি বলেন, বাজারে যে মাল্টা পাওয়া যায় তার চেয়ে ফলগুলো বেশি মিষ্টি। সাইজেও এ মাল্টাগুলো বড় হয়। ৬ থেকে ৭টি মাল্টায় কেজি হয়। বাজারে মাল্টা কেজি বিক্রি হয় সাড়ে ৩শ টাকা করে। আর আমরা বিক্রি করি ২শ টাকা করে।

জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকতা মো. মাহমুদুল আলম খান বলেন, 'লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে মাল্টা চাষে ঝুঁকছে কৃ ষকরা। শুকনা মৌসুমে মাল্টার উৎপাদন বাড়াতে গাছের পরিচর্চায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। এ প্রযুক্তিতে পানি ও সার একসঙ্গে দেওয়া যাবে ড্রিপ ইরিগেশনের মাধ্যমে। '

তিনি বলেন, 'যারা মাল্টা চাষ করেছে তাদের ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর নতুন মাল্টা চাষী ৪৫ জন বেড়েছেন। অফিস থেকে প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষকদের ৬ রকমের সার, কীটনাশক, ছত্রাক নাশক, সিকেচার, স্প্রে মেশিন এবং মাটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও শুকনা মৌসুমের জন্য মালচিং পেপার বিতরণ করা হয়েছে।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়