মো. কাওছার ইকবাল, শ্রীমঙ্গল
আপডেট: ১৫:৫৮, ২০ নভেম্বর ২০২৪
প্রশাসনের সহায়তায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে খাসিদের বর্ষবরণ উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’

নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে খাসি তরুণীরা। ছবি- আই নিউজ
খাসি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’(বর্ষবিদায়) অনুষ্ঠানটি অবশেষে প্রশাসনের সহায়তায় পালিত হবার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ২৩ নভেম্বর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাগুরছড়া খাসি(খাসিয়া) পুঞ্জির খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে খাসিদের বর্ষবরণ উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’।
তবে আর্থিক সংকটের কারণে এ বছর অনুষ্ঠানটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত থাকলেও, শেষ পর্যন্ত সরকারের শীর্ষ পর্যায় এবং প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাসে ও খাসি নেতৃবৃন্দের যৌথ উদ্যোগে উৎসবটি আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি।
২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছর ২৩ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠানটি করে আসছে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল।খাসিয়ারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও সাজসজ্জায় সেজে নেচে–গেয়ে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন। সেং কুটস্নেম উৎসবের দিন সবাই মিলে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে আনন্দে নিজেদের সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন। অনুষ্ঠানস্থলে পুরো মাঠ জুড়ে মেলা বসে। বিভিন্ন স্টলে খাসিয়ারা পোশাক,পান, তীর, ধনুক, বাঁশ-বেতের তৈরী জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন। এই উৎসবে সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০/৮০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ এসে অংশ নেন।
মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। খাসিয়ারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নাচেগানে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন। দিনব্যাপী উৎসবে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতার। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, খোয়াই ডখা (মাছ শিকার), কিউত্নেং (তৈলাক্ত বাশে উঠা) সহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেদের সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন। অনুষ্ঠানস্থলে মেলা বসে। বিভিন্ন স্টলে খাসিরা তাদের নিজেদের তৈরি ঐতিহ্যপূর্ণ খাবার, পোশাক, পান, তীর, ধনুক, বাঁশ-বেতের জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন।
খাসিয়া সম্প্রদায়ের পাশাপাশি এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালি ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষসহ দেশী-বিদেশী পর্যটকরা অংশগ্রহণ করে থাকেন। তবে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুভাবের কারণে ২০২০ সালে খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বর্ষ বিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান খাসি সেং কুটস্নেম উদযাপিত হয়নি।
ব্রিটিশ শাসন আমল থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ২৩ নভেম্বর খাসি বর্ষ বিদায় ‘খাসি সেঙ কুটস্যাম’ পালন করা হয়। পরদিন ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হয় খাসি বর্ষ বরণ। বর্ষপুঞ্জি অনুযায়ী এবার ১৬০তম বর্ষকে বিদায় ও ১৬১তম বর্ষকে বরণ করে নিবে খাসি জনগোষ্ঠী।
কেন এবার উৎসব স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ছিল? এব্যাপারে জানতে চাইলে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমী জানান, খাসিদের আয়ের উৎস পান ব্যবসায় চলছে চরম মন্দা। খাসিরা পানের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। এজন্য চরম অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগছেন খাসিরা। আর্থিক সংকট থাকার কারণে এ বছর অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছিল। তবে সরকার ও খাসি নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত উৎসবটি হচ্ছে।
সংগঠনের সভাপতি জিডিশন প্রধান সুচিয়াং বলেন, আমাদের আর্থিক সংকট থাকা সত্ত্বেও সরকার ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমরা এই উৎসবটি আয়োজন করতে যাচ্ছি। এটি আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক বন্ধনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঐতিহ্য।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’