প্রেস বিজ্ঞপ্তি
পতিত স্বৈরাচার পুলিশের মাজা ভেঙে দিয়েছে: এম নাসের রহমান

মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আয়োজনে জনসমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাসের রহমান
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান বলেছেন- 'বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ বলে কোন দল এখন আর নাই। বাংলাদেশে বর্তমানে একমাত্র বড় রাজনৈতিক শক্তি হল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। আমাদের রাজনৈতিক শক্তি আগের মতোই দেশের জনগণের সাথে অটুট আছে।'
জাতিসংঘ শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটা গণহত্যাকারী স্বৈরাচার হিসেবে টাইটেল দিয়েছে। এখন আর শেখ হাসিনার পক্ষে ভারতেরও কথা বলা সম্ভব নয় । ভারতকে একমাত্র আঙ্কেল চাচা মামা যাই বলে ভারত ছাড়া তার আর কিছুই নাই। যেখানে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে, ১৪০০ লোককে তার নির্দেশে হত্যা করেছে সেই লোক কে ভারত আশ্রয় দিয়ে কি দেখাতে চায়? -এম নাসের রহমান
তিনি বলেন- 'আপনারা দেখছেন বিগত ছয় মাসধরে কিছু দল যাদের আগে আমরা বলতাম প্রিন্স পার্টি। উনারা এখন অনেক লম্ফঝম্প দিচ্ছেন। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ বলে কোন দল এখন আর নাই। এবং এই দলের ভবিষ্যতে আর উত্থান হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না আমি দেখছি না। অদূর ভবিষ্যতেও আমরা বাংলাদেশ স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের কোনো অস্তিত্ব থাকার সুযোগ দেখতে পাচ্ছি না। এখন জুলাই বিপ্লবীরা এই খালি জায়গায় ফিল ইন দ্য গ্যাপ পূরণের জন্য একটু খানি নড়া চড়া দিচ্ছেন। এরা পতিত স্বৈরাচারের দলের নেতাকর্মীদের আলকেল্লা টুপি পরিয়ে তাদের দলে আনার চেষ্টা করছেন।’
নাসের রহমান বলেন- ‘জুলাই বিপ্লবে ছাত্ররাও নেতৃত্ব দিয়েছিল এখন শুনছি উনারাও একটা দল ঘোষনা দিবেন। এ আন্দোলনে উনারা সামনের নেতৃত্বে ছিলেন কিন্তু পেছনের ভূমিকায় কে ছিল? পিছনের ভূমিকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। যে দলের ৮২৪ জন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী এবং বাকি আরও দুই তিনশ বিএনপির সমর্থক এই ১৪০০ লোকের মধ্যে মারা গিয়েছিল। কিন্তু বিএনপি কি এনিয়ে বড়াই করতেছে না কি? যে বিএনপির এত লোক মারা গিয়েছে। এনিয়ে আমাদের দলের পক্ষ থেকে এই নিহত ৮২৪ জনের পক্ষে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে ফ্যাসিস্ট হাসিনার ওপর মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজকাল অনেকে মন্তব্য করেন ছাত্ররা আন্দোলন করেছে বলে বিএনপি রাজনীতি করতে পারতেছে। এই যে অপরিপক্ক ইমম্যাচিয়ুড ছেলেদের এসব কথাবার্তা। তিন সপ্তাহের আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পড়ে যায়নি। তারমতো বিপদজনক ফ্যাসিস্ট তিন সপ্তাহের আন্দোলনেই পড়ে যায়নি। এটার প্রেক্ষাপট কে সৃষ্টি করেছিল। এটার প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং তার নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান করে দিয়েছিলেন।’
নাসের রহমান বলেন- ‘ছাত্ররা দল করতে চাচ্ছেন ভালো কথা। আজকে শুনলাম তারা ৪০০ টা থানায় নাকি কমিটি করে ফেলেছেন। ভাল কথা। তবে একটা জিনিস জেনে রাখা দরকার। কমিটি করে ভোট আসবে না। ভোট আসতে হলে জনগণের সাথে মাঠে ঘাটে গ্রামেগঞ্জে জনগণের সাথে সম্পর্ক রাখতে হয়।’
নাসের রহমান বলেন- ‘আমাদের দেশের পুলিশের মাজাটা ভেঙে গেছে। পুলিশ এখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না। এই পুলিশের মাজাটা ভাঙলো কেন? পুলিশের মাজা ভাঙার জন্য কি বাঙ্গালি বসেছিল। এই পতিত স্বৈরাচারের সময় বাংলাদেশ পুলিশ লীগ নামে যে পুলিশ লীগ ছিলো এরাই তো ওই পুলিশের মাজাটা ভেঙে দিয়েছে। এখন জেনুইন পুলিশরা পুলিশ চালায়। যারা জেনুইন পুলিশ তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অন্ধ বিশ্বাসী ছিল না। এখন যারা পুলিশ প্রশাসনে আছেন তারা বিগত সাড়ে পনের বছর পুলিশে কাজ করতে পারেননি । ওই সময়ে উনাদের বেশির ভাগই ঘরে বসে চিনাবাদাম খেতে হয়েছিল। বর্তমানে পুলিশের একজন রিটায়ার্ড অফিসার কে পুলিশের আইজিপি করা হয়েছে। এই পুলিশের মেরুদণ্ডটাও পতিত সরকার ভেঙে দিয়েছে । এখন আস্তে আস্তে পুলিশের মাজা সোজা করা হচ্ছে । একটু সময় লাগছে। আমি পুলিশ বাহীনিকে বলতে চাই- বিশেষ করে পলাতক আওয়ামী লীগারা কোন কোন গর্তে লুকিয়ে আছে তাদেরকে বের করতে এখন আরো সচেষ্ট হতে হবে।’
নাসের রহমান বলেন- ‘জাতিসংঘ শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটা গণহত্যাকারী স্বৈরাচার হিসেবে টাইটেল দিয়েছে। এখন আর শেখ হাসিনার পক্ষে ভারতেরও কথা বলা সম্ভব নয় । ভারতকে একমাত্র আঙ্কেল চাচা মামা যাই বলে ভারত ছাড়া তার আর কিছুই নাই। যেখানে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে, ১৪০০ লোককে তার নির্দেশে হত্যা করেছে সেই লোক কে ভারত আশ্রয় দিয়ে কি দেখাতে চায়? যে ভারত কি বাংলাদেশের জনগণের সাথে, না ভারত শেখ হাসিনার সাথে। এই ভারত শেখ হাসিনার জন্য কাঁদছে। সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের কাছে নালিশ দিয়েছিলেন আর ট্রাম্প কি বলেছিলেন? এই বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী খুব পারদর্শী। উনি একশবছর ধরে বাংলাদেশ নিয়ে গবেষণা করছেন, ট্রাম্প উনার কাছে ছেড়ে দিয়ে বলেন- উনি মোদী বাংলাদেশ সম্পর্কে কি বলতে চান। তখন বেচারা হতচকিত হয়ে যান। তখন বাংলাদেশ সম্পর্কে না বলে এড়িয়ে যান অন্যদেশ নিয়ে মোদী মন্তব্য করেন।’
নাসের রহমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরনের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা এবং রাস্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদদের দোসরদের নানান চক্রান্তের অপচেষ্টা প্রতিহতের দাবীতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আয়োজনে মৌলভীবাজার পৌরসভা প্রাঙ্গনে জনসমাবেশে অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ুনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সিলেটে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান চৌধুরী।
জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব কাজী মাওলানা আব্দুর রহিমের পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে সভার কাজ শুরু হয়।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য আব্দুল ওয়ালী সিদ্দীকি,মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক,বকসী মিছবাউর রহমান,সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক বদরুল আলম, যুগ্ম আহবায়ক মারুফ আহমেদ,পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সরোয়ার মজুমদার ইমন,কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদোয়ান খান, বড়লেখা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জয়নাল আবেদীন, জুড়ি উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোস্তাকিম হোসেন বাবুল, শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুরুল আলম সিদ্দিকী, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক শামীম আহমেদ, কমলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অলি আহমদ খান, কমলগঞ্জ পৌর বিএনপির আহবায়ক শোয়েব আহমেদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোহিত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক ইসহাক আহমেদ চৌধুরী মামনুন, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান প্রমূখ।
উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট সুনীল কুমার রায়, মুজিবুর রহমান মজনু,জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা শরিফুল হক সাজু,দুরুদ আহমেদ,শ্যামলী সুত্র ধর,কুলাউড়া বিএনপির সিনিয়র সদস্য শওকতুল ইসলাম শকুসহ ছাত্রদল,যুবদল,কৃষকদল,মহিলা দলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ শুরুর আগে জেলা সদর সহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপির শতশত নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। এক পর্যায়ে সমাবেশটি জনসমাবেশ পরিণত হয়।
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’