সিলেট প্রতিনিধি
ফের উত্তাপ চা বাগানে, বৃহত্তর আন্দোলনের ইঙ্গিত
বকেয়া মজুরি পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন। ছবি- সংগৃহীত
চলতি বছরের আগস্ট মাসে সারাদেশের চা বাগানগুলোতে চা শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এর জের ধরে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে নিজে ফয়সালা করে দিতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ৫০ টাকা মজুরিও বাড়ে শ্রমিকদের। কিন্তু এ আন্দোলনের ৪ মাস না পেরোতেই আবারও উত্তাপ চা বাগানে। এবার তাদের দাবি বকেয়া মজুরি পরিশোধের। প্রয়োজনে আবারও একোটি বৃহত্তর চা শ্রমিক আন্দোলনের ইঙিত দিচ্ছে চা শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ চা-সংসদ।
গত মঙ্গলবারও নগরে বিক্ষোভ করেছে একাধিক চা-শ্রমিক সংগঠন। শ্রমিকদের ১৯ মাসের বকেয়া মালিকপক্ষ পরিশোধ করছে না বলে অভিযোগ তাদের। চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ না করে বিজয় দিবস উদযাপন ন্যায়সঙ্গত সেটিও প্রশ্ন রেখেছেন তারা।
জানা গেছে- ১৬৬ চা-বাগানে ১ লাখ ৩ হাজার স্থায়ী ও ৩৫ হাজার অস্থায়ী শ্রমিক আছেন। শ্রমিকসংগঠনগুলো পাওনা পরিশোধের দাবিতে বাগান-মালিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছে, প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে চিঠি। তবু বকেয়া আদায় না হওয়ায় এই আন্দোলন- বলছেন চা শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ অবস্থায় শ্রমিকনেতাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে বৈঠক ডেকেছেন দপ্তরের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলাম।
দুই বছর পরপর চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা-সংসদের সঙ্গে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের আলোচনা হয়। এতে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
কোনো কারণে এই চুক্তি নির্ধারিত সময়ের পরে হলে প্রথা অনুযায়ী আগের চুক্তি শেষ হওয়ার পর থেকেই বর্ধিত মজুরি কার্যকর হয়। তা পরিশোধও করে মালিকপক্ষ।
চা-শ্রমিকদের সঙ্গে মালিক পক্ষের সবশেষ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। সে হিসেবে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নতুন করে চুক্তি করে সে অনুযায়ী মজুরি কার্যকর হওয়ার কথা।
তবে সবশেষ মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মালিক-শ্রমিকনেতাদের একাধিক বৈঠক হলেও মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দুপক্ষ।
এ অবস্থায় মজুরি বাড়ানোর দাবিতে গত আগস্টে দেশের সবগুলো চা-বাগানের শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। ১৯ দিন লাগাতার তাদের কর্মবিরতির পর ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা-বাগানমালিকদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে চা-শ্রমিকদের মজুরি ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১২০ থেকে ১৭০ টাকা ঘোষণা দেয়া হয়।
এই ঘোষণার পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন চা-শ্রমিকরা।
এই ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী-নির্ধারিত ১৭০ টাকা করে মজুরি দেয়া হচ্ছে। তবে প্রথা অনুযায়ী আগের চুক্তি শেষ হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ের বর্ধিত মজুরি দেয়া হয়নি। ফলে প্রায় ১৯ মাসের বর্ধিত মজুরির বকেয়া পড়ে আছে শ্রমিকদের।
চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘বকেয়া আদায়ের জন্য আমরা মালিকদের কাছে একাধিকার ধরনা দিয়েছি। শ্রম অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় এমনকি ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘চা-শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। এখন বকেয়া না পেয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।’
চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ও খাদিম চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সবুজ তাঁতি বলেন, ‘অনেক শ্রমিকের ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বকেয়া পড়ে আছে।’
আগের প্রত্যেকটি চুক্তির বর্ধিত বকেয়া অংশ পূর্ববর্তী চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরদিন থেকে কার্যকর হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘এবারই কেবল মালিকরা টালবাহানা করছেন। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মজুরি বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বকেয়া মজুরির বিষয়ে কিছু বলেননি। বকেয়া পরিশোধ করা না হলে আবার আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা-সংসদ সিলেট শাখার চেয়ারম্যান জি এম শিবলী বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মজুরি প্রদান করছি। বকেয়া প্রদানের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
আইনিউজ/এইচএ
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল | ICU | CCU | Dialysis | Emergency Call
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’