নবীগঞ্জে খৎনার সময় ডাক্তারের ভুলে শিশুর রক্তক্ষরণ 

নবীগঞ্জে সরকারিভাবে সিলগালা করা কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে ভুল অপারেশন করে শিশুর খৎনা করতে গিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণের অভিযোগ উঠেছে এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে। রোগী কান্নকাটি করলে তাকে ও তার আত্বীয় স্বজনকে চিকিৎসক ও মালিক পক্ষ মা র পি ট করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল বুধবার (০৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার সময় নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজার কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঘটনাটি ঘটেছে।

ঘটনার পর হাসপাতালটিকে ঘেরাও করে ফেলেন উত্তেজিত জনতা। লাইভে সংবাদ প্রচার করতে গেলে মালিক সুহুল আমিন সাংবাদিকদের হাত পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দে।

খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিভাবে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে কাউকে পায়নি। এ বিষয়ে ভুল অপারেশনের শিকার শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। 

জানা যায়, অভিযুক্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১৫ দিন আগে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনুমোদনবিহীন থাকায় সিলগালা করা হয়। ঘটনার দিন বিকাল ৪ টার সময়ে নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের আব্দুস শহীদের ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র তামিম আহমেদকে (১২) খৎনা করার জন্য নিয়ে আসলে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সুহুল আমিন ও ডাক্তার জহিরুল ইসলাম চৌধুরী জয় সিলগালা করা কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালা খুলে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন।  হঠাৎ রোগীর চিৎকার শোনে মা বাবা আত্মীয় স্বজন ভিতরের প্রবেশ করে দেখতে রোগী কেন চিৎকার করছে তার জন্য ডাক্তার ও মালিক রোগীকে চর থাপ্পড় মারছেন। তারা প্রতিবাদ করলে মালিক সুহুল আমিন ও তার লোকজন রোগীর আত্মীয় স্বজনকে মা র পি ট করে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বাহির করে দেন। এতে চরম হট্রগোল শুরু হয়। 

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ আহমদ আজাদ, সাংবাদিক বুলবুল আহমদসহ কতিপয় সাংবাদিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানতে চান ও লাইভ করতে চাইলে মালিক নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ আহমদ আজাদকে হাতা পা ভেঙে দেওয়ার হু ম কি দেন। পরে উপস্থিত জনতা রোগীকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। 

রাতে শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডাক্তার ও মালিকসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বলেন, আমার ভাতিজাকে খৎনার নামে ভুল অপারেশন করে লিঙ্গ কেটে ফেলে, প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। সে কান্নাকাটি করলে তাকে ডাক্তার ও  মালিক মারপিট করেছেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় সিলেটে একটি বেসরকারি হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।

• নবীগঞ্জে কলেজছাত্র তাহসিন হ ত্যা: ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) শাহীন দেলোয়ার বলেন, সিলগালা করা কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কেন খোলা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এটা আমরা ১৫ দিন আগে সিলগালা করা হয়েছিল। 

নবীগঞ্জ উপজেলা টিএইচও ডাক্তার আব্দুস ছামাদ বলেন, অনুমোদনবিহীন কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হয়েছে।  আজকে কেন কে বা কারা খুলেছে আমরা বিষয়টি জানিনা। খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলী জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ঘটনাটি খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়েছি।

আই নিউজ/এইচএ