শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
শ্রীমঙ্গলে বাজারে পলিথিন ব্যবহারে বাড়ছে ঝুঁকি!
শ্রীমঙ্গলের একটি ময়লার ভাগাড়ে পলিথিনের স্তুপ। ছবি- আই নিউজ
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ হাট বাজারে দিনদিন বেড়েই চলেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের ব্যাগের ব্যবহার। বাজারে কোন কিছুতেই লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না এই নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন, বিক্রয় ও ব্যবহার।
এই পলিথিন ব্যবহারে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং অপচনশীল দ্রব্যে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে পরিবেশ জনজীবন ও জীব বৈচিত্র্যের উপর।
উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শপিং মল, কাঁচা বাজার ও মাছ বাজারে পলিথিনে পণ্য বিক্রি রীতিমত উৎসব চলছে। হাট বাজারের বিভিন্ন দোকানে দেখা গেছে পলিথিনের ব্যবহার। ফলে এসব পলিথিন যত্রতত্র ফেলে দেবার কারণে মাটি হারাচ্ছে তার উর্বরতা, বন্ধ হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। দূষিত হচ্ছে বিশুদ্ধ বায়ু প্রবাহ ও সেই সাথে ছড়াচ্ছে বিভিন্ন ক্ষতিকর রোগ জীবাণু। পলিথিন ব্যবসা সল্প পূঁজিতে অধিক লাভজনক ও বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশব্যাপী পলিথিন উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
সরেজমিনে শহরের অদুরে হাইল- হাওরে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহৃত ফেলে দেওয়া পলিথিন জমা হয়েছে হাওরের পানি প্রবাহের খালের ভিতর। যা জলজ প্রাণীদের জীবনচক্র যেমন ব্যহত করছে, তেমনি এই অপচনশীল দ্রব্যে মাটি হারাচ্ছে উর্বরতা, বন্ধ হচ্ছে হাওরের পানি প্রবাহ।
এর ফলশ্রুতিতে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তর ২০০২ সালে বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাত, ক্রয়-বিক্রয়, প্রদর্শন, মজুদ ও বিতরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু সরকারের পক্ষে নিষিদ্ধ ঘোষিত হবার একযুগেরও বেশি সময় পরেও আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে নিষিদ্ধ পলিথিনের অবাধ ব্যবহার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে পলিথিনের পরিবর্তে পাটজাত ব্যাগ ব্যবহারের আইন পাশ করা হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ২০০২ সালের দিকে পলিথিন ব্যাগ বা পলিথিন উৎপাদন নিষিদ্ধ হওয়ার পর সারাদেশে এর বিপক্ষে জোরালো অভিযান পরিচালিত হয় এবং আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল।
এরপর দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর পার হয়ে যায়, কিন্তু আইন ভঙ্গ করে যারা পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয় ও ব্যবহার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে নজরদারি বা আইনগত তেমন কোনো প্রক্রিয়া এখন আর তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। যথাযথ নজরদারি না থাকায় সেই পুরোনো আদলেই মাঠপর্যায়ে পলিথিন ব্যবহার শুরু হয়েছে।
পরিবেশ কর্মী রিয়াজ খাঁন জানান, ‘দেশে পাটজাত পণ্যের বিপনন ও ব্যবহারে আইন করা হলেও সরকারের উদাসীনতা এবং তদারকির অভাবে জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না। অন্যদিকে এই পলিথিন স্বল্পমূল্যের কারনে মানুষ না বুঝেই এর অধিক ব্যবহার করছে, তাই বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারন।’
পরিবেশ কর্মী ও লাউয়াছড়া বন ও জীববৈচিত্র রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক প্রভাষক জলি পাল বলেন, ‘এদেশে এমনিতেই পরিবেশ বিপজ্জনক অবস্থানে রয়েছে। আমাদের হাওর, নদী ও খাল দখলের মহাউৎসব চলছে। অন্যদিকে বাজারে পলিথিনের সহজলভ্যতা এবং মানুষের অসচেতনতা আমাদের জন্য আরেকটি অশনিসংকেত, এখনই এর লাগামটেনে না ধরলে আমাদের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।’
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় দীর্ঘদিন কাজ করা খোকন সিংহ জানান, ‘সরকার পলিথিনের ব্যবহার ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে অনেক আগেই, কারণ এই অপচনশীল পলিথিনে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারন তৈরি করছে। আমি নিজেও পরিবেশ ও জীববৈচিত্র নিয়ে কাজ করছি দীর্ঘদিন। এখন দেশে অবৈধ পলিথিন মজুদ বা বিক্রি করার ব্যপারে সরকারি নজরদারি না বাড়ালে পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের জন্য আমাদের দেশে ভবিষ্যতে অশনিসংকেত তৈরি হবে।’
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, ‘পরিবেশ উপদেষ্টা আমাদের একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এতে উল্লেখ করোছেন আমরা যেনো অফিসে বিভিন্ন মিটিংয়ে পানির বোতল ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করি, এবং কম ব্যবহার করি সেই বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। সুপার শপ কিংবা বিভিন্ন স্টলে পলিথিন নিষেধ কিংবা পলিথিনের জন্য অভিযান এই ধরনের কোনও নির্দেশ আমরা পাইনি। পলিথিন উৎপাদন পর্যায় থেকে বন্ধ না হলে বাজারে খুচরা পর্যায়ে অভিযান কিংবা জরিমানা করে এর সুফল পাওয়া যাবে না।’
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’