Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৯ ১৪৩২

সাইফুর রহমান তুহিন

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে বেড়াতে গেলে যা যা করবেন

আন্দামান দ্বিপপুঞ্জের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ছবি- সংগৃহীত

আন্দামান দ্বিপপুঞ্জের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ছবি- সংগৃহীত

আপনি কি নয়নাভিরাম আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে বেড়াতে যাওয়ার বিষয়টি ঠিকঠাক করে ফেলেছেন এবং নিজের জন্য একটি ভালো সফরসূচি তৈরি করা নিয়ে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দের মধ্যে আছেন? সেখানে আয়েশি ভঙ্গিতে সমুদ্র সৈকতে সময় কাটানো এবং দারুণ সুস্বাদু সব কোমল পানীয়ের স্বাদ পরখ করার পাশাপাশি রয়েছে প্রাণভরে উপভোগ করার মতো অনেক কাজের সুযোগ। 

বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এই দ্বীপপুঞ্জে আপনার ভ্রমণ হতে পারে আরাম-আয়েশ, অ্যাডভেঞ্চার ও প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটানো, এ সবকিছুর এক চমৎকার মিশ্রণ। এই লেখায় আমরা আপনাকে জানানোর চেষ্টা করবো যে, আন্দামানে অবস্থানকালে আপনার জন্য সেরা এবং তুলনামূলক মজার কী কী অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

স্কুবা ডাইভিং  
আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ হচ্ছে স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য বিশ্বের সেরা জায়গাগুলোর একটি। সবুজাভ পানি, বর্ণিল প্রবাল শৈবালসমূহ এবং একটি সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবন আপনার জন্য অপেক্ষা করে আছে। একজন গাইডের প্রয়োজন হবে আপনার, তারপর স্কুবা গিয়ার পরে নিন এবং মাছের সাথে সাঁতরাতে থাকুন।


সাগরতলে হাঁটাহাঁটি 
পনির নিচে তো ইতোমধ্যেই পৌঁছে গেছেন আপনি, এখন সাঁতারে একটু বিরতি দিয়ে সাগরতলে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করবেন না কেনো ? তখন হয়তো না বলে পারবেন না যে, ‘‘আমি সাগরতলে অনেকক্ষণ হাঁটতে পছন্দ করি।’’ তবে সঠিক পোশাক পরতে ভুলবেন না কারণ, সাগরতল খুব নিরাপদ জায়গা নয় এবং এমন জিনিসও আছে যা আপনাকে গুঁতো দিতে পারে।

বারাতাং দ্বীপে চুনাপাথরের গুহা দেখতে যান 
বারাতাংয়ের গুহাসমূহে যাতায়াতের জন্য ফেরির ব্যবস্থা রয়েছে। খেয়াল করে সঠিক জুতা পরে যান কারণ, গুহার ফ্লোরে খাঁজকাটা পিলার ও পাথর আছে এবং সংকীর্ণ ফ্লোরে আয়েশি ভঙ্গিতে হাঁটা তেমন সহজ নয়। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য এসব গুহা সত্যিই দারুণ। পাখি দেখার শখ থাকলে যেতে পারেন তোতা দ্বীপে। সূর্যাস্তের সময় অসংখ্য পাাখি কিচিরমিচির করে তাদের আবাসস্থলে ফেরে।

ম্যাংগ্রোভ কায়াকিং 
মায়াবন্দরের বিস্ময়কর ম্যাংগ্রোভ এলাকাগুলোতে বেড়াতে যান। ভালোভাবে খেয়াল করলে সেখানে চমৎকার সব উদ্ভিদ ও বন্য জীবনের দেখা পাবেন। আপনি হয়তো জানেন না যে, একটি দ্বীপের বেশির ভাগ জায়গায় ভাঙন সমস্যার কারণে এসব ম্যাংগ্রোভ অনেকটা এককভাবে দেখভাল করা হয়। ভালো করে দেখুন চমকপ্রদ সব গাছপালাকে যেগুলো জনপ্রিয় এই দ্বীপটিকে সকল দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। তবে সবার আগে কায়াকিংটা ভালো করে শিখে নিন।

জেলে যান! 
শান্ত হোন ! আপনাকে বুঝানো হচ্ছে বিখ্যাত সেলুলার জেল দেখতে যাওয়ার কথা। অনেক বলিউড সিনেমায় ভিলেনদেরকে (কখনো নায়কদেরকে) কালাপানির জেলে বন্দী করা হয়েছে। এটা অবশ্য ফিকশন বা কল্পনার জগতের কথা। বাস্তবে ব্রিটিশরা ভারতের অনেক স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদেরকে এই জেলে বন্দী করে রেখেছিলো। সেলুলার জেল পরিদর্শন করে ইতিহাসের শিক্ষা নিন। কারাগারটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯০৬ সালে।


চিদিয়া তপুতে গিয়ে প্রকৃতিপ্রেমী হোন 
যদি আপনি সমুদ্র সৈকতের ক্ষেত্রে নিতান্তই অনভিজ্ঞ হন এবং এ বিষয়ে নিজেকে পরিপক্ক করতে চান তাহলে চিদিয়া তপু আপনারই জায়গা। এটি ‘বার্ড আইল্যান্ড’ বা পাখির দ্বীপ নামেও যথেষ্ট পরিচিত। এই নাম হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির ব্যাপক বৈচিত্র্যের কারণে যাদের আবাস রয়েছে সেখানে। এই সৈকতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য এককথায় নজরকাড়া।

ব্যারেন দ্বীপের আগ্নেয়গিরির সৌন্দর্য উপভোগ করুন 
সমগ্র ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এটি। যতো অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী এটি দেখতে যান তারা এই আগ্নেয়গিরি দর্শনের কথা অনেক অনেক দিন আলোচনা করে থাকেন। মানব-সৃষ্ট কারণে ব্যারেন দ্বীপ বলতে গেলে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কিন্তু এটিকে বাঁচানো প্রয়োজন কিছু বিশেষ প্রজাতির শিয়াল, বাদুড়, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, ইঁদুর এবং কিছুটা বিস্ময়করভাবে ছাগলদের জন্য। 

সূত্র : দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া


লেখক : সাইফুর রহমান তুহিন, সাংবাদিক ও ভ্রমণ লেখক

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়