দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি চান চা শ্রমিকরা

বুধবার (১৭ আগস্ট) ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশীয় চা সংসদ ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিপক্ষীয় সভায় মালিক পক্ষ আমাদের ১২০ টাকা থেকে ২০ টাকা বাড়িয়ে ১৪০ টাকা করার প্রস্তাব দিলেও সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন চা শ্রমিক নেতারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) হবিগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে চা শ্রমিকেরা তাদের দাবির কথা আবারও তোলে ধরেন। দুপুর ২টায় তারা জেলার মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুরে মহাসড়ক অবরোধ করেন।

বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কের আশপাশের একাধিক চা বাগানের শ্রমিকরা জগদীশ চৌমুহনীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নেন। তারা প্রায় ১ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখলে মহাসড়কের দুপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মাঈনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের দাবিগুলো লিখিত আকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন।

• প্রয়োজনে না খেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চা শ্রমিকদের

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বালিশিরা ভ্যালী, লংলা ভ্যালী, মনু-ধলাই ভ্যালী, জুড়ি ভ্যালী, লস্করপুর ভ্যালী, সিলেট ভ্যালী, চট্রগ্রাম ভ্যালীতে আলাদাভাবে চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাথে বৈঠক শেষে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) বিকেল সাড়ে ৪টায় তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে প্রেসব্রিফিং করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। এর আগে ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবিতে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন শ্রমিকরা। প্রেসব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সামনে নতুন মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাবার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পাল বলেন, গতকাল ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশীয় চা সংসদ ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিপক্ষীয় সভায় মালিক পক্ষ আমাদের ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং চলমান ধর্মঘট প্রত্যাহার করার জন্য বলেছিলেন। আমরা সেখানে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বলে এসেছিলাম মাঠ পর্যায়ে আমাদের শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। তাদের সাথে আলোচনা না করে আমরা কোন সীদ্ধান্ত দিতে পারবো না।  

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আজ (১৮ আগস্ট) আমরা আমাদের সারাদেশের ৭টি ভ্যালীটি ৭টি আলাদা আলোচনা করেছি। কেউ এই প্রস্তাবে রাজি নন। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি সব বিষয় বিবেচনা করে মালিক পক্ষের এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করছি। আমাদের যে কর্মসূচীগুলো আছে সেগুলো আমরা অব্যাহত রাখবো। আমরা সাধারণ চা শ্রমিকদের  পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারকে অনুরোধ করছি তিনি যেন এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে শ্রমিকদের নায্য মজুরি, নায্য অধিকার যেন বাস্তবায়ন করেন।

• শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠক : চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলবে
•  চা-শ্রমিকের মজুরি বাড়ানো উচিৎ কি-না একটু ভাবুন

তাদের দাবি আদায় না হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করে আসছেন শ্রমিকরা। ওইদিন চা-শ্রমিকরা চান্দপুর এলাকায় পুরাতন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক কিছু সময় অবরোধ করেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে গত বুধবার শ্রীমঙ্গলের লেবার হাউসে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে  আমাদের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবি তুলে ধরি। তিনি গুরুত্বসহকারে আমাদের কথাগুলো শোনেন এবং আমাদের আশ্বস্ত করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও বাগান মালিক সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন। কিন্তু বৈঠকে আমাদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় চা শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছেন।’

আইনিউজ/এইচএ

আইনিউজে আরও পড়ুন-

• মৌলভীবাজারে বঙ্গবন্ধু : খুঁজে পাই পিতার পদচিহ্ন (ভিডিও)
• দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ: ইতিহাসে ভিন্নরকম এক সঙ্গীতায়োজন
• এ পি জে আব্দুল কালাম: ‘দ্য মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া’