Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৭ ১৪৩২

অঞ্জন রায়, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:১২, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

নবীগঞ্জে ব্যক্তিগত গাড়িতে সাইরেন ব্যবহার, বিড়ম্বনায় জনগণ 

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

পুরো দেশে শব্দদূষণের মাত্রা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরগুলোর অবস্থা আরো করুণ। রাস্তার পাশের বাড়িঘর, অফিস-আদালতে বসবাস করা রীতিমতো দুঃসহ হয়ে পড়েছে। হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আঞ্চলিক সড়কে যানবাহনের হর্ন, নানা অনুষ্ঠানের পটকাবাজি, লটারির টিকেট, বৈদ্যুতিক বাল্ব, কসমেটিকসহ এ ধরনের বিভিন্ন দ্রব্য বিক্রির গাড়ির সঙ্গে ব্যবহৃত মাইকের শব্দে মানুষ দিশেহারা। এসব দূষণের সঙ্গে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে দামি গাড়িতে  ব্যক্তিগত কার গাড়ি  মটর বাইকে সাইরেন বাজানো।

আগে সাইরেন ব্যবহার করা হতো অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের পিকআপসহ অতি প্রয়োজনীয় ও জরুরি কাজে নিয়োজিত বিশেষ কিছু সরকারি গাড়িতে। সেই সময়টাতে সাইরেনের শব্দ শুনলে মনে হতো কোথাও আগুন লাগার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি জানমাল রক্ষায় দ্রুত ছুটে যাচ্ছে অথবা কোনো দুর্ঘটনা স্থলে পুলিশ যাচ্ছে কিংবা অ্যাম্বুলেন্স মুমূর্ষু রোগী বহন করছে। যার ফলে যে যেই অবস্থায় থাকুক না কেন, রাস্তা থেকে অন্য পরিবহন সরিয়ে ওই সব পরিবহনকে দ্রুত চলাচলের সুযোগ করে দিত। অথচ এই বিশেষ হর্ন এখন ব্যক্তিগত গাড়িসহ অসংখ্য সাধারণ গাড়িতে দেখা যাচ্ছে।

বিধি অনুযায়ী বাংলাদেশে উল্টো পথে চলা বা সাইরেন বাজিয়ে রাস্তা ফাঁকা করে কোনো ভিআইপি চলাচল অনুমোদিত নয়। কিন্তু নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাট ববাজার যানজটে স্বঘোষিত ভিআইপিরা রাস্তাঘাটে সামনের গাড়ি মটর সাইকেল থেকে সহজে সাইড পাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধার আশায় এবং উল্টো পথে চলাচলের সুবিধা নিতে ব্যক্তিগত গাড়িতে সাইরেন সংযোজন করছেন। এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ গাড়ির হর্নের সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়ির হর্ন মিলে যাচ্ছে। ফলে সাইড দেয়া বা না দেয়া নিয়ে চরম বিভ্রান্তিতে পড়তে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ এবং গণপরিবহনের চালকদের। এভাবে আর কতকাল? এভাবে হেঁয়ালিপনা চলতে থাকলে এবং গুরুত্বপূর্ণ যানবাহনের হর্ন যেখানে-সেখানে বাজতে থাকলে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বোধটুকু আর আশা করা যাবে না। ফলস্বরূপ ফায়ার সার্ভিস, পুলিশের পিকআপ এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ গুরুত্বপূর্ণ গাড়ির সেবাদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সাইরেন হর্নের যথাযথ ব্যবহার সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। তাহলেই সাইরেনের গুরুত্ব বুঝে শব্দদূষণ কমানো, মূল্যবান সময় বাঁচানোসহ আমাদের দেশকে আরো গতিশীল করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন উপজেলার সচেতন মহল।

নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, অতিরিক্ত সাইরেন  কারণে কানের ভেতরে রিসেপ্টর প্রথমে শব্দ তরঙ্গকে ধারণ করে, তারপর ককলিয়ার নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠায়। দীর্ঘদিন অতিরিক্ত শব্দ এই রিসেপ্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ক্রমাগত যারা অনেক শব্দের মধ্যে থাকেন তারা ধীরে ধীরে শ্রবণশক্তি হারাতে থাকেন। অনেকে টেরও পান না যে তারা ধীরে ধীরে কানে কম শুনছেন।

নবীগঞ্জ  থানা ট্রাফিক পুলিশ এটিএসআই মো. খলিলুর রহমান তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ছাড়া যারা গাড়িতে বা মটর সাইকেলে জরুরি কাজে ব্যবহার হওয়া সাইরেন ব্যবহার করছে তা অবৈধ। প্রথমে আমরা বিভিন্ন সতর্কমূলক বার্তা প্রদান করি। প্রতি সপ্তাহে অভিযানে বিভিন্ন মামলা এবং সঠিক কাগজপত্র না থাকায় এ ধরনের গাড়ি মটর সাইকেল জব্দ করে থাকি।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়