সোহেল সানি
আপডেট: ২১:১৮, ১৫ আগস্ট ২০২২
বাংলাদেশে জাতির পিতা হত্যা: বিচার ও মর্যাদা!
বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু নন, বিশ্বের অনেক দেশের জাতির পিতাকেই জীবন দিতে হয়েছে। তবে হত্যার বিচার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যতীত কোন দেশ করেনি কালক্ষেপণ, করেনি তামাশা। বঙ্গবন্ধুর ন্যায় নিষিদ্ধ হননি রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন জাতির পিতা। কোন দেশও জাতির পিতা হত্যার বৈধতা দেয়নি।
উল্লেখ্য, যে মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ, করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, সেই মাতৃভূমিতেই জীবন দিয়েছেন জাতির পিতা হিসাবে অভিষিক্ত এসব মহান নেতা। ঔপনিবেশিক দখলদারদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জন করলেও তাদের ষড়যন্ত্রের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারেননি। নির্মম হত্যার শিকার হয়েছেন, নেদারল্যান্ডের উইলিয়াম, মেক্সিকোর হিডালগো, ভারতের মহাত্মা গান্ধী, বার্মার অং সান, বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু।
"উইলিয়াম"
খুনি গিরার্ডের ডান হাত তপ্ত লৌহ দন্ড দ্বারা এমনভাবে পোড়াতে হবে যাতে হাড় হতে মাংসপেশি চিমটি দিয়ে টেনে তোলা যায়, তার প্রতিটি অঙ্গ হতে মাংসপেশি এমনভাবে তুলতে হবে, যাতে সে প্রচন্ড কষ্ট পায় কিন্তু জীবিত থাকে। অধিকন্তু গিরার্ডের শরীরকে এমনভাবে ঝলসাতে হবে যাতে তার শরীর হতে মাংসপেশি মোমের মতো ঝড়ে পড়ে। অবশেষে তার হ্রদপিন্ডে যখন আগুনের আঁচড় লাগবে এবং পুরো শরীর অবশ হয়ে যাবে তখন তার মুন্ডু কর্তন করতে হবে।" নেদারল্যান্ডের জাতির পিতা উইলিয়াম অব অরেঞ্জের হত্যাকারী গিরার্ডের মৃত্যুদণ্ড এভাবেই কার্যকর করা হয়। ব্রিটিশ বিজ্ঞানৈতিহাসিক লিসা জার্ডিনের মতে মুঠো পিস্তল দিয়ে ১৫৮৪ সালের ১০ জুলাই গিরার্ড সংঘটিত এই হত্যাকান্ডই বিশ্বের কোন প্রথম জাতির পিতা বা রাষ্ট্রপ্রধান হত্যা।
১৫৩৩ সালের ২৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণকারী ও ১৫৮৪ সালের ১০ জুলাই বিশ্বাসঘাতক গিরার্ডের গুলিতে নিহত উইলিয়ামকে নেদারল্যান্ডের "Father of the Matherland" (মাতৃভূমির জনক) বলা হয়। প্রসঙ্গত, বিশ্বের অন্যান্য স্বাধীন দেশগুলোর স্থপতিদের বলা হয় জাতির পিতা (Father of the Nation). উইলিয়াম বিশ্বের একমাত্র ভাগ্যবান রাষ্ট্রস্রষ্টা, যাঁর নামে জাতীয় সঙ্গীত "Het Wilhelmus, মূলত এটি উইলিয়ামের প্রশংসা-কীর্তন। সিন্ট অল্ডিগোন্ডের লর্ড ফিলিপস ভ্যান মার্নিক্ম এ সঙ্গীতটি রচনা করেন। শুধু তাই নয়, নেদারল্যান্ডের জাতীয় পতাকার রং লাল-সাদা-নীল হতে লাল পরিবর্তন করে অরেঞ্জ-সাদা-নীল করা হয়। উইলিয়াম অব অরেঞ্জের সম্মানে নেদারল্যান্ডের জাতীয় রং অরেঞ্জ করা হয়।
খেলোয়াড়দের পোশাকের রংও অরেঞ্জ। হত্যাকারী ক্যাথলিক ধর্মানুসারী ফ্রান্স নাগরিক বালথসার গিরার্ড দ্বিতীয় ফিলিপের কট্টর সমর্থক ছিলেন। সে মনে করতো, উইলিয়াম অব অরেঞ্জ স্পেনের রাজা ও ক্যাথলিকদের শত্রু। ১৫৮১ সালে দ্বিতীয় ফিলিপ উইলিয়ামকে হত্যা করার জন্য ২৫ হাজার ক্রাউন পুরস্কার ঘোষণা করে। এ খবর শুনে গিরার্ড নেদারল্যান্ডে ভ্রমণের উদ্দেশ্য যান। ১৫৮৪ সালের মে মাসে গিরার্ড ফ্রান্সের অভিজাত পরিচয়ে নেদারল্যান্ডে আসেন।
১০ জুলাই উইলিয়াম অব অরেঞ্জের বাসভবন 'ডেলফট' (বর্তমানে প্রিন্সেনহপ) এ সাক্ষাতের অনুমতি পান। গিরার্ড বাসায় প্রবেশ করে। এসময় উইলিয়াম সিঁড়ি বেয়ে নামছিলেন। গিরার্ড তখনই সামনে এগিয়ে গিয়ে উইলিয়ামের বুকে পিস্তল দিয়ে গুলি করে। দ্রুত পালিয়ে ডেলফট ত্যাগের আগেই গিরার্ড ধৃত হয়। অফিসিয়াল রেকর্ড অনুযায়ী প্রাণপ্রদীপ নিভে যাওয়ার মূহুর্তে উইলিয়ামের মুখে শেষ কথাটি ছিল, "হে প্রভু আমার আত্মাকে শান্তি দিন, আর অভাগা খুনিটির প্রতি সহানুভূতি দেখান।
"মেক্সিকোর হিডালগো"
মেক্সিকান জাতির পিতা মিগুয়্যেল হিডালগো। ১৮০৯ সালে হিডালগোর অসন্তোষ এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, তিনি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পরিবর্তে সশস্ত্র ও বিদ্রোহের রাজনীতি শুরু করেন। "দখলদার অপশক্তির নৃশংস থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে, তাড়াতে হবে সাম্রাজ্যবাদী শকুন, হয় স্বাধীনতা নয় মৃত্যু।" এই ছিল তাঁর যুদ্ধ নীতি। তিনি গড়েও তুলেছিলেন স্পেন শাসকদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম।
- আরও পড়ুন: রক্তাক্ত ১৫ই আগস্ট
১৭৫৩ সালের ৮ মে জন্মগ্রহণকারী হিডালগোকে ১৮১১ সালের ৩০ জুলাই হিডালগোকে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়। হিডালগোর সহচর চার নেতা আলেন্দে, জোসে, ম্যারিআনো ও জুয়ান যুদ্ধের ময়দানে বিশ্বাসঘাতকতামূলক প্রক্রিয়ায় স্পেনিস বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যান। ১৮১১ সালের ২ জুন এবং ৩০ জুলাই জোসে ছাড়া সবাইকে মৃত্যু দন্ড দেয় এবং তা কার্যকর করে। হিডালগো সহ তিন নেতার মস্তক গুয়ানাজুয়াটোতে প্রকাশ্য স্থানে রেখে দেয়া হয়েছিল। জোসে মারিয়া বিদ্রোহী বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করে স্বাধীনতা যুদ্ধ অব্যাহত রাখেন।
১৮২১ ১৬ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা অর্জনের পর হিডালগোর দেহ চিহুয়াহুর সান ফ্রাসিসকো টেম্পল সমাধি হতে উঠিয়ে কর্তিত মস্তক পুনরায় দেহের সঙ্গে সংযুক্ত করে মেক্সিকো সিটিতে সমাধিস্থ করা হয়। তাঁর সম্মানে হিডালগো অঙ্গ রাজ্য এবং জালিস্কোর গুয়াডালাজারার ডোলারস হিডালগো শহর ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামকরণ করা হয়। মেক্সিকোর ১০০ পিসোর নোটে তাঁর ছবি রয়েছে।
"উরুগুয়ের জোসে অর্টিগাস"
উরুগুইয়ান জাতির পিতা জোসে গার্ভাসিও অর্টিগাস। এটি একটি আশ্চর্যের বিষয় যে, জোসে তার জীবদ্দশায় কখনও উরুগুয়েকে পৃথক ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি করেননি। শুধু অরিয়েন্টাল রাষ্ট্রগুলোর সমন্বয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সংগ্রাম করেন। তবুও ইতিহাস তাঁকে উরুগুইয়ান জাতির পিতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। যুদ্ধ ও সংগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ, জনবল ও সমর্থন হারিয়ে অর্টিগাস অনেকটা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন।
১৮২০ সালে তিনি প্যারাগুয়ে চলে যান। কিন্তু প্যারাগুয়ের শাসক ড. ফ্রাঙকিয়া তাঁকে বহিষ্কার করেন তার দেশ থেকে। ১৮৫০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর অর্টিগাস একটি ঘোড়া চান। ঘোড়ায় ওঠেন এবং গাউচো অর্থাৎ দক্ষিণ আমেরিকার মিশ্র বর্ণের রাখালের ন্যায় স্যাডেলে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচন্ড ভক্ত ও অকৃত্রিম অনুরাগী অর্টিগাসের স্টাচু রয়েছে মেক্সিকো সিটি, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, মন্টিভিডিউ, মিনেসোটা, নেওয়ার্ক, নিউজার্সি, ম্যানহাটনে।
"মহাত্মা গান্ধী"
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ কর্তৃক ভারতের অবিসংবাদিত রাজনীতিবিদ ও আধ্যাত্মিক নেতা হিসাবে 'মহাত্মা' উপাধিতে ভূষিত হন। সাধারণ্যে তিনি নিজের নামের আড়ালে মহাত্মা গান্ধী হয়ে ওঠেন। ১৯৬৯ সালের ২ অক্টোবর তাঁর জন্মদিনকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস এবং ভারতের জাতীয় দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। ১৯৪৪ সালের মার্চে কারারুদ্ধ গান্ধী প্রাণঘাতী ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলে ব্রিটিশ সরকার তড়িঘড়ি তাঁকে মুক্তি দেন। তখন তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কা করে এই মুক্তি দেয়া হয়।
১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি নয়া দিল্লিতে 'বিড়লা ভবন' এর মাঠে এক অনশনকালে নথুরাম গডসে নামক এক হিন্দুমহাসভার এক চরমপন্থীর গুলি ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর প্রাণ কেড়ে নেয়। গডসে বিচারের মুখোমুখি হয়ে আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে যে জবানবন্দি দেন, তাতে সে বলে, " সোহরাওয়ার্দীকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তান তথা মুসলমানদের প্রতি অধিক সহানুভূতি দেখিয়ে গান্ধী হিন্দুদের তথা ভারতকে দুর্বল করে যাচ্ছিলেন। গডসে বলেন, দুটি পাখি শিকারই তার উদ্দেশ্য ছিল, একটি গান্ধী, অন্যটি সোহরাওয়ার্দী।"
উল্লেখ্য ভারত বিভাগকালে অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বৃহত্তর বাংলার স্বাধীনতার দাবি করে 'ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডে' কর্মসূচি ঘোষণা করেন। রাজধানী কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে তখন হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা সংঘটিত হয়। পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় ওই দাঙ্গা। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সোহরাওয়ার্দীর ভুমিকাকে হিন্দুমহাসভা হিন্দু বিরোধী অ্যাকশন বলে প্রচার করে। শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার স্বপ্ন বাদ দিয়ে সোহরাওয়ার্দীকে মুসলিম লীগ দিল্লি কনভেনশনে জিন্নাহর নির্দেশে 'পাকিস্তান প্রস্তাব উত্থাপন করতে হয়।
প্রসঙ্গত ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর বৈরুতে মৃত্যুবরণকারী পাকিস্তানের এককালীন প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দীকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। শেখ মুজিবুর রহমানের করা এই অভিযোগকে অধিকাংশ রাজনীতিবিদ সমর্থন করেছিলেন। ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর গডসে ও তার সহায়তাকারী নারায়ণ ত্রপটের ফাঁসি দেয়া হয়। গুলিবিদ্ধ হবার পর গান্ধী শুধু একটি কথাই উচ্চারণ করেছিলেন,'হে রাম' (হে ইশ্বর)। নেহেরু সরকার গান্ধীর অনশন আন্দোলন নিয়ে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ছিলেন। কংগ্রেস তাঁর নানা ভুমিকায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। সোহরাওয়ার্দী ও শরৎচন্দ্র বসুর 'স্বাধীন যুক্তবাংলা' দাবির প্রতি সমর্থন দিতে গিয়ে মহাত্মা গান্ধী নিন্দিত হন।
কংগ্রেস এজন্য ধিক্কার প্রস্তাব গ্রহণ করে গান্ধীকে সংযত হবার পরামর্শ দেয়। ভারত বিভক্তির পর প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভ ভাই প্যাটেল মহাত্মা গান্ধীর পাকিস্তান প্রীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। গান্ধীর দাবির মুখে পাকিস্তানের পাওনা অর্থ ভারত সরকার দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু গান্ধী হত্যার পর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে কংগ্রেস সরকার। তড়িঘড়ি করে বেতার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নেহেরু বলেন, " বন্ধু ও সাথীরা, আমাদের জীবনের সব আলো নিভে গেছে, চারদিকে ভরে গেছে নিকষ অন্ধকার তমসায়।
আমি জানি না, কী বলবো এবং কীভাবে বলবো। আমাদের পরম জাতির পিতা, যাকে আমরা বাপু ডাকি সেই তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। আমরা তাঁকে আর কখনও দেখবো না, তাঁর কাছে ছুটে যেতে পারবো না কোন উপদেশের জন্য। এটি শুধু আমার জন্য নয়, লাখো-কোটি মানুষের জন্যেও ভয়ঙ্কর।" আলবার্ট আইনস্টাইন ১৮৯৯ থেকে ১৯৯৯ শতকের জন্য শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসাবে অভিহিত করেছেন। টাইম ম্যাগাজিন নেলসন ম্যান্ডেলা, দালাই লামা, লেস ওয়েললেসো, বেনিংগো এ্যাকুইনে ও ডেসমণ্ড টুটুকে মহাত্মা গান্ধীর সন্তান রূপে অভিহিত করে।
ভারতে প্রচলিত প্রত্যেক নোটে গান্ধীর ছবি রয়েছে। ১৯৪৮ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের লাভ করেছিলেন গান্ধী। কিন্তু হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ায় তা প্রত্যাহার করে নিতে হয় নোবেল কমিটিকে। আলফ্রেড নোবেলের 'ইচ্ছাপত্র' অনুযায়ী কাউকে মরণোত্তর পুরস্কার দেয়া যায় না। নোবেল কমিটি ১৯৪৮ সালে এই মর্মে ঘোষণা করে যে, এ বছর জীবিত কোন যোগ্য ব্যক্তি পাওয়া যায়নি।
১৯৮৯ সালে দালাই লামা নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলে নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, এটি মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধার অংশ। ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু দিবসে বিশ্বের বিভিন্ন স্কুলে School day of Non-violence and Peace, পালিত হয়। ১৯৬৪ সালে স্পেনে এ দিবস পালনের সূত্রপাত করে। ২০০৮ সালের ৩০ জুন মুম্বাই শহরের নিকটবর্তী আরব সাগরে ঢেলে দেয়া হয় মহাত্মা গান্ধীর ভস্মাধার ছাই।
"অং সান"
মিয়ানমারের (বার্মা) জাতির পিতা অং সান ১৯১৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালের ১৯ জুলাই ইয়াঙ্গুনের সেক্রেটারিয়েট ভবনে নির্বাহী কাউন্সিল সভা চলছিল। সকাল সাড়ে দশটায় একদল সশস্ত্র আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য হঠাৎ সেক্রেটারিয়েট দেয়াল ভেঙ্গে সভাকক্ষে প্রবেশ করে। অং সান এবং মন্ত্রিসভায় ৬ সদস্যকে হত্যা করা হয়।
অং সানের ভাই মন্ত্রী, কেবিনেট সেক্রেটারি ও দেহরক্ষীও নিহত হন। বিরোধী দলের নেতা উ সও'র ফাঁসি হয়। কন্যা অংসান সূচি নোবেলে শান্তি জয়ী। ৯০ সালে সামরিক সরকার এসে জাতির পিতার সবকিছু মুছে দিতে চাইলেও সে প্রয়াস বন্ধ হয়। অং সানের এক পুত্র অং সান রাজকীয় হ্রদে ডুবে মারা যায়। বড় পুত্র বোন অং সান সূচির রাজনীতির বিরোধী। যদিও অং সান সুচি বর্তমানে মিয়ানমারে কারান্তরীণ ।
"বঙ্গবন্ধু"
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন নিজ বাসভবনে। বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার সদস্যরা খন্দকার মোশতাককে রাষ্ট্রপতি মেনে নিয়ে মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করে। ইনডেমনিটি করে হত্যাকে বৈধতা দেয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। সাংবিধানিকভাবে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা হলেও তাকে রাষ্ট্রীয় প্রচার যন্ত্রে নিষিদ্ধ করা হয়। পরবর্তী সরকার কর্তৃক খুনীদের বিদেশি দূতাবাসে চাকুরি দেয়া হয়।'
ফ্রিডম পার্টি' নামে দেয়া হয় দল গঠনের অধিকার। দীর্ঘ একুশ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে হত্যার বিচার করা হয়। রায়ও কার্যকর করা হয়েছে বেশ কয়েকজন খুনীর। বঙ্গবন্ধুকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জাতির পিতার সুমহান মর্যাদায়।
লেখক
সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
আইনিউজ/রাহাদ সুমন/এসকেএস
দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি
মৌলভীবাজারে জাতির পিতার পদচিহ্ন নিয়ে ‘খুঁজে ফিরি পিতার পদচিহ্ন’
শেখ রাসেলকে নিয়ে লেখা কবিতা- `বিশ্বমানব হতেই তবে` ।। তাওফিকা মুজাহিদ ।। আবৃত্তি ।। EYE NEWS
নয় বছরের মেয়েটি কিভাবে নেভায় একের পর এক আগুন?
- বাংলাদেশে শিশু শ্রম: কারণ ও করণীয়
- ২০২৩ সালে কী সত্যিই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে?
- পনেরো আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্ধ
মোশতাক বললেও মন্ত্রীদের কেউ সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে যায়নি! - করোনা যেভাবে চিকিৎসকদের শ্রেণীচ্যুত করলো
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সমস্যা এবং সম্ভাবনা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কুকুর স্থানান্তরকরণ ও ভবিষ্যৎ
- শরীফার গল্প পড়তে আমাদের এতো কেন সমস্যা?
- ফিলিস্তিনে প্রাণ হারাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা
- মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা
- রেমডেসিভির একটি অপ্রমাণিত ট্রায়াল ড্রাগ