নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট: ১৯:৪৭, ১৫ এপ্রিল ২০২৪
লাউয়াছড়ায় এই ঈদে রেকর্ড ভাঙা পর্যটক উপস্থিতি
ঈদের ছুটিতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ গেটে পর্যটকদের ভিড়।
প্রতিবছর ঈদ, উৎসব আসলেই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পর্যটকদের উপস্থিতিতে। ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকরা ছুটে আসেন দেশের সংরক্ষিত এই জাতীয় উদ্যানে। এবছরও ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ১১ হাজারের বেশি পর্যটক উদ্যান ভ্রমণে এসেছেন।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকিট কাউন্টার থেকে জানা যায়, এবার ঈদের দিন বৃহস্পতিবার থেকে রোববার ৫টা পর্যন্ত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা। ঈদের ছুটির ৪দিনে লাউয়াছড়ায় এ যাবৎ কালের রেকর্ড পর্যটক ১১হাজার ২শত জন পর্যটকের আগমন ঘটে।
ঈদের দিন বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) লোকজনের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন জীব বৈচিত্র্যের অপরূপ সমাহার ঘুরে দেখতে।
ঈদের ছুটিতে লাউয়াছড়ায় ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী সজীব হেসেন, কলেজ ছাত্রী লাভলী আক্তার জানান, লাউয়াছড়ার বন একটি সমৃদ্ধ বন। প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য আর জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর এই বনটি যে কেউ দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। তারা জানান, আমরা অনেক বছর ধরে এখানে আসার চেষ্টা করছি, কিন্তু সময় হয়ে ওঠেনা। এবার ঈদের ছুটিতে তাই চলে আসলাম।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকেট কালেক্টর শাহিন আহমদ জানান, এই প্রথম পর্যটকের উপচেপড়া ভিড় ছিল। যা অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি। বলা যেতে পারে এবারের পর্যটক উপস্থিতি আগের অনেক বারের রেকর্ড ভেঙেছে। এত পর্যটক কখনো আগে আসেনি। আমাদের পর্যটক সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে।
লাউয়াছড়া ইকো টুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আহাদ মিয়া বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে লাউয়াছড়াসহ সব পর্যটনকেন্দ্রে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে। ঈদের দিন বৃষ্টি থাকলেও পর্যটকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো ছিল। কিন্তু ঈদের পরের ৭দিন পর্যন্ত পর্যটক বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঈদের অন্যান্য সময়ের তুলনায় পর্যটকের সমাগম অধিক ঘটেছে। তবে ঈদে পর্যটকদের উপস্থিতি সব সময়েই বেশি হয়ে থাকে। ঈদের দিন থেকে ১০দিন পর্যটকের আগমন বেশি লক্ষ্য করা যায়।
একনজরে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান
কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। বাংলাদেশের ৭টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও ১০টি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে এটি অন্যতম। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত ১২৫০ হেক্টর আয়তনের এ বন জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। প্রতিবছর ঈদে কিংবা সরকারি ছুটিতে এখানে ঢল নামে পর্যটকদের। পরিবার নিয়ে অনেকেই ছুটে আসেন এই জঙ্গল ঘেরা উদ্যানে বিরল পশুপাখির দর্শন পাবার আশায়।
জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে লাউয়াছড়ার জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের সমৃদ্ধতম বনগুলোর একটি। আয়তনে ছোট হলেও এ বন দুর্লভ উদ্ভিদ এবং প্রাণীর এক জীবন্ত সংগ্রহশালা। বনে প্রবেশের সাথে সাথেই নানা ধরনের বন্যপ্রাণী, পাখি এবং কীটপতঙ্গের শব্দ শোনা যায়। বনের মধ্যে প্রায় সারাক্ষণই সাইরেনের মত শব্দ হতে থাকে; প্রকৃতপক্ষে এটি এক ধরনের ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ। লাউয়াছড়ার জাতীয় উদ্যানে ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি এবং ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়।
বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের জন্য এ বন বিখ্যাত। বনের মধ্যে কিছু সময় কাটালেই উল্লুকের ডাকাডাকি কানে আসবে। উল্লুক ছাড়াও এখানে রয়েছে চশমাপরা হনুমান, লজ্জাবতী বানর, মুখপোড়া হনুমান, বানর, শিয়াল, মেছোবাঘ, রামকুত্তা, এশীয় কালো ভাল্লুক, মায়া হরিণ সহ নানা প্রজাতির জীবজন্তু। মায়া হরিণ সাধারণত উচ্চতায় ২০-২২ ইঞ্চি। এদের বাদামী রঙের দেহ যা পিঠের দিকে ঘিয়ে গাঢ় রং ধারণ করে।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’