Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৩ ১৪৩২

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৫২, ২১ আগস্ট ২০২২
আপডেট: ১৯:৪৯, ২১ আগস্ট ২০২২

সন্তোষের পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা দিলেন বিজ্ঞানমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস

সন্তোষ রবিদাস অঞ্জনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।

সন্তোষ রবিদাস অঞ্জনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।

সম্প্রতি মৌলভীবাজার জেলার শমশেরনগরের ফাড়ি কানিহাটি চা বাগানের চা শ্রমিক এক সংগ্রামী মা কমলি রবিদাসের মেধাবী সন্তান সন্তোষ রবিদাস অঞ্জনের এক আবেগঘন পোস্ট রীতিমতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ভাইরাল হলে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের নজরে আসে।

সন্তোষ রবিদাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ ফ্যাকাল্টির মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর পাস করা মৌলভীবাজারের সন্তোষ রবিদাস অঞ্জনের জীবন সংগ্রামী মা কমলি রবিদাসকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সন্তোষের পরিবারকে সহায়তা করার জন্য এক লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন।

রবিবার (২১ আগস্ট) এক সংগ্রামী চা শ্রমিক মায়ের প্রতি জেলা প্রশাসন শ্রদ্ধা জানিয়ে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সন্তোষকে আমন্ত্রণ জানান এবং তার মায়ের প্রতি ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। । জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের দেওয়া এক লক্ষ টাকা সন্তোষের হাতে তুলে দেন।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কমলগঞ্জ, সাধারণ সম্পাদক, মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবের সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সন্তোষ রবিদাসের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য তাকে শুভকামনা জানান সবাই।

সন্তোষ রবিদাসের মতো সকল সুবিধাবঞ্চিত কৃতি শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে জেলা প্রশাসন সর্বদা থাকবে বলে জানান, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। এ সময় জেলা প্রশাসক সন্তোষকে কমলগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খন্ডকালীণ শিক্ষকতা করার প্রস্তাব দেন। এছাড়া সে ইচ্ছা পোষণ করলে আবুল খায়ের গ্রুপসহ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে চাকরির সুযোগ করে দেয়া হবে।

সে এই ব্যাপারে পরিবারের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে জেলা প্রশাসককে জানান। মৌলভীবাজারের শমসেরনগরে ফাঁড়ি কানিহাটি চা বাগানের এক শ্রমিক পরিবারে জন্ম সন্তোষ রবিদাস অঞ্জন। জন্মের মাস ছয়েকের মাথায় বাবাকে হারিয়েছিলেন। মা কমলি রবিদাস চা বাগানের শ্রমিক। তখন মজুরি পেতেন দৈনিক ১৮ টাকা। সেই সময় ছেলেকে অন্যের বাসায় রেখে তিনি চলে যেতেন চা বাগানে।

ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন সন্তোষ। ২০১৩ সালে ভর্তি হন ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজে। সন্তোষের মায়ের মজুরি ছিল তখন ১০২ টাকা। তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছেলের ভর্তির টাকা, ইউনিফর্ম আর বই-খাতা কিনে দিয়েছিলেন। ২০১৪ ডিসেম্বরে ছিল সন্তোষের এইচএসসির নিবন্ধন।

তাঁর মা কমলি রবি দাস তখন ৫০ টাকার একটি নোট দিয়ে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলেছিলেন, ‘দেহি, কেউ ধার দেয়নি রে, বাপ।’ কলেজের এক শিক্ষকের কাছ থেকে ধার নিয়ে সেবার নিবন্ধন ফি দেওয়া হয়। এইচএসসির পর ভর্তি পরীক্ষার কোচিং। তাঁর মা কমলি রবিদাস তখন আবার ঋণ নিলেন ব্যাংক থেকে। লোনের কিস্তি পরিশোধে বাসা থেকে অনেক দূরে গিয়ে বালু শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

এভাবে খেয়ে না খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে পড়ার সুযোগ পেলেন সন্তোষ। মা-ছেলের এই সংগ্রামের এই আবেগন গল্প নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তা ফেসবুকে রীতিমতো ভাইরাল হয় এটি। প্রতিবেদনটি শেয়ার দিয়ে অনেকে এই মাকে ‘স্যালুট’ জানিয়েছে। সেই অদম্য সংগ্রামী মা-ছেলের গল্প অনেকের নজর কাড়ে।

আইনিউজ/এসকেএস

দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি

চা শ্রমিক মা কিভাবে ছেলেকে পড়ালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, শুনুন সেই সংগ্রামের গল্প || Eye News

দিনমজুর বাবার ছেলে মাহির বুয়েটে পড়ার সুযোগ || BUET success story of Mahfujur Rhaman || EYE NEWS

নৌযান বানিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ছোট কিশোর হাকিমুল || Eye News || Moulvibazar || Bout

সিরিজ বোমা হামলা দিবসে মৌলভীবাজারে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল || Eye News || Awami League || Moulvibazar

মৌলভীবাজারে জাতির পিতার পদচিহ্ন নিয়ে ‘খুঁজে ফিরি পিতার পদচিহ্ন’

বিস্ময় ছোট বালিকা দেয়ালিকা চৌধুরী বলতে পারে ১৯৫ দেশের রাজধানীর নাম | Deyalika | Eye News

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়