সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
হাওরে বোরো ধান কাটার উৎসব শুরু
হাওরের পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত এক বৃদ্ধ দাওয়াল। ছবি- সংগৃহীত
আষাঢ়-শ্রাবণ মাসের ঢল নামার আগ পর্যন্ত সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় থাকে বোরো ধানের ব্যতিব্যস্ততা। স্বপ্নের সোনালি বোরো ধান কেটে গড়ে তোলতে প্রস্তুতি শেষে দাওয়াল নিয়ে মাঠে নামেন চাষীরা। প্রতিবছরের মতো এবারও সুনামগঞ্জের হাওরে বৈশাখের শুরুতেই লেগেছে পড়েছে ধান কাটার ধুম।
গত কয়েকদিন পূর্বে ঝড়-বৃষ্টি জনিত কারনে কৃষকরা মনে যে আতঙ্কের জন্ম নিয়েছিল এখন আর সেটা নেই। আবহাওয়া ভাল হওয়ায় আনন্দিত হয়ে ধান কাটতে নেমেছে শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ, নারী ও পুরুষ। এলাকার বাহিরে থাকা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ছুটে আসছে সহযোগিতা করার জন্য। হাওরের একমাত্র ফসল বোরো ধানের উপর নির্ভর করে চলে কৃষক পরিবারের সবকিছু।
শাল্লা কৃষি অফিস জানিয়েছে, শাল্লায় ছোট-বড় ১৭টি হাওরের ২১ হাজার ৭১৪ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে বোরো ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন। গত বছরের সরকার নির্ধারিত বাজার মূল্যে প্রায় ৩১৪ কোটি টাকার ধান উৎপাদন হতে পারে।
বাহাড়া ইউপির মৃদুল দাস নামে এক কৃষক বলেন, ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে। তবে নিরাপদে ধান ঘরে তুলতে পারলেই আমরা খুশি, এই ফসলের উপর নির্ভর করে আমাদের সবকিছুই। কিছু ধান কেটে এখন রোদে শুকিয়ে গোলায় তুলা হচ্ছে। এখন নদীতে যে পরিমাণ পানি রয়েছে ফসলরক্ষা বাঁধের জন্য তেমন একটা ঝুঁকি নাই। মধ্যে অতিরিক্ত ঢলে বিভিন্ন হাওরে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল এখন খরা দেওয়ায় আস্তে আস্তে এগুলো কমছে।
হবিবপুর ইউনিয়নের সদস্য ও বরাম হাওরের কৃষক বিশ্বরুপ দাশ বলেন, আমি এই বছর ৭৫ কেয়ার জমি করেছি। সব খরচ বাদ দিয়ে আশা করি ১৫০০ মণ ধান হবে। একটু ভয় ছিল আবহাওয়ার জন্য। এখন আগের তুলনায় আবহাওয়া অনেক ভালো। কৃষকরা আনন্দে ধান কাটা শুরু করছে। ভাল রোদ দেওয়ায় ধান ও বন শুকাতে সুবিধা হচ্ছে। বর্তমানে নদীতে যে পরিমাণ পানি আছে হাওরে ফসলের ক্ষতি আশঙ্কা মুক্ত।
শাল্লা ইউনিয়নের আমিনুর রহমান নামে কৃষক জানান, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে ফসলের অবস্থা খুবই ভাল। ধান কাটা পুরোদমে শুরু হয়েছে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি না হয় আল্লাহর রহমতে বাম্পার ফসল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফসল কাটতে পারলে লাভমান হতে পারব আমরা।
আটগাঁও ইউনিয়নের ইয়াহিয়া নামে কৃষক জানান, আমরা ভাটি এলাকার ৯৫% মানুষ এই কৃষির জমির উপর নির্ভরশীল। জমিতে ধান দেখলে মনটা ভরে উঠে। প্রকৃতি সদয় থাকলে কৃষকের স্বপ্ন বাস্তব হবে এবং কৃষকের ফসল ঘরে তুলে উৎসব আনন্দে মেতে উঠুক। কিন্তু বাঁধ ভেঙ্গে যেন হাওরের ফসলহানি নাহয় সেইদিকে পিআইসির কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ জানাচ্ছি।
শাল্লা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তুষার বলেন, আমরা এই পর্যন্ত ৮.৫% ধান কাটা হয়েছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে এই সপ্তাহের শেষদিকে ৫০% ধান কাটা শেষ হবে আশাবাদী। বর্তমানে ধান কাটতে স্থানীয় শ্রমিকের পাশাপাশি বহিরাগত শ্রমিকও আছে। হারভেষ্টার ও রিপার মেশিন ২০টা আমাদের এবং বাহিরে থেকে আসা আরো ৩০ টা ধান কাটছে। আমাদের অফিস স্টাফ সবসময় মাঠে কাজ করছে। কৃষকের ফসল ঘরে তুলতে আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে বলে জানান তিনি।
আই নিউজ/এইচএ
- মেয়ের বাড়িতে ইফতার: সিলেটি প্রথার বিলুপ্তি চায় নতুন প্রজন্ম
- অবশেষে ক্লাস করার অনুমতি পেল শ্রীমঙ্গলের শিশু শিক্ষার্থী নাঈম
- দেশের চতুর্থ ধনী বিভাগ সিলেট
- শ্রীমঙ্গল টু কাতারে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালি নেটওয়ার্ক
মৌলভীবাজারে অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর - এসএসসির ফলাফলে বিভাগে ৩য় স্থানে মৌলভীবাজার
- বিজ্ঞাপন
মৌলভীবাজারে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় লাইফ লাইন হাসপাতাল (ভিডিও) - মৌলভীবাজারে ট্যুরিস্ট বাসের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
- ১ ঘন্টার জন্য মৌলভীবাজারে শিশু কর্মকর্তা হলেন তুলনা ধর তুষ্টি
- মৌলভীবাজার শহরে একদিনে ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত
- বন্ধ থাকবে মৌলভীবাজারের ‘এমবি’